একই সময়ে দুই অধ্যক্ষ সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে

সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ
সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ  © ফাইল ছবি

সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজকে সরকারীকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছির ২০১৯ সালে। যদিও তা এখনো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি এখনো বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে। সে অনুযায়ী কলেজটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন গভর্নিং বডির (জিবি) নিয়োগ দেয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নীনা একরাম। আবার সরকারীকরণ সম্পন্ন হওয়ার আগেই গত বুধবার শিক্ষা ক্যাডারের অধ্যাপক সৈয়দা মঞ্জুয়ারা সুলতানাকে কলেজটির অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে একই সময়ে একই কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেয়েছেন দুজন শিক্ষকই।

গভর্নিং বডি দাবি, তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ ছাড়াই বিধিবহির্ভূত এ নিয়োগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাই তারা এ নিয়োগ বাতিল চান। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এরই মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠিও দিয়েছে কলেজটির গভর্নিং বডির পক্ষ থেকে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সচিবকে পাঠানো জিবির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি সিরাজ উদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে অনুরোধ করা হয় মন্ত্রণালয়ের দেয়া নিয়োগ বাতিল করার জন্য। তাতে বলা হয়েছে, অধ্যাপক সৈয়দা মঞ্জুয়ারা সুলতানাকে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ পদে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরির শর্তাবলি রেগুলেশন (সংশোধিত)- ২০১৯ অনুযায়ী সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ গভর্নিং বডি অনুমোদিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নীনা একরাম কর্মরত রয়েছেন। কলেজের পক্ষ থেকে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে প্রেষণে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে কোনো আবেদন করা হয়নি। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা থাকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ সরকারীকরণ ঘোষণা করা হলেও কলেজের পক্ষ থেকে এখনো ‘ডিড অব গিফট’ সম্পাদন করা হয়নি। সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ বেসরকারি কলেজ বিধায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। এমন অবস্থায় সৈয়দা মঞ্জুয়ারা সুলতানাকে এ কলেজের প্রেষণে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ আদেশ বাতিল করার জন্য অনুরোধ করা হলো। আর উপাচার্যকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়, ২০১৯ সালে কলেজটি সরকারি ঘোষণা করা হয়। ঘোষণার ফলে দেখা যায় অধিকাংশ শিক্ষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং অনেকে চাকরি হারাবেন। এ কারণে এখনো ডিড অব গিফট সম্পাদন করা হয়নি। 

২০২২ সালের ১ নভেম্বর সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসারে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে জানিয়ে ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, তার শূন্যপদে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরির শর্তাবলি রেগুলেশন (সংশোধিত) ২০১৯-এর ৪এর ২(র) অনুসারে কলেজের জ্যেষ্ঠতম সহযোগী অধ্যাপক নীনা একরামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে সৈয়দা মঞ্জুয়ারা সুলতানা প্রেষণে নিয়োগ আদেশ নিয়ে যোগদান করতে আসেন। সরকারীকরণ আদেশে কলেজে সব নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বিধায় তার যোগদানপত্র গ্রহণ করা হয়নি এবং তার নিয়োগ বাতিলের জন্য শিক্ষা সচিবকে পত্র দেয়া হয়েছে। সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী পরিচালিত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রেষণে অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য গভর্নিং বডি কোনো অনুরোধ জানায়নি। সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে প্রেষণে অধ্যক্ষ নিয়োগ করেছেন। তার নিয়োগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।

সার্বিক বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নীনা একরাম জানান, জাতীয়করণের পরিদর্শনের পর কলেজের কোনো ধরনের নিয়োগ ও বদলির সুযোগ নেই। তাই গভর্নিং বডি থেকে তখন আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। আমি মূলত সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছি। অধ্যক্ষ পদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছি। এটা স্থায়ী কোনো পদ নয়। সম্প্রতি একজন অধ্যাপককে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে ওনাকে যোগদানের অনুমোদন দেয়া হয়নি। যদি গভর্নিং বডি কিংবা বৈধ অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের নিয়োগপ্রাপ্ত কেউ অনুমোদিত প্রক্রিয়ায় যোগদান করেন তাহলে অবশ্যই দায়িত্ব হস্তান্তর করব বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ