সতর্ক থাকলেই রক্ষা—জানুন কোন খাবারে পেটে জমে মেদ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৫ PM , আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৫ PM

পেটের মেদ অনেকের কাছেই একটি বিব্রতকর ও অস্বস্তিকর সমস্যা। অনেকেই মনে করেন, উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবারই একমাত্র পেটের মেদ বাড়ায়। কিন্তু বাস্তবে যেকোনো অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণই পেটে মেদ জমার কারণ হতে পারে। একবার মেদ জমে গেলে সেটা আর কমানো সম্ভব নয়—এই ধারণাটিও ভুল। বরং সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে সহজেই মেদ কমিয়ে ফেলা সম্ভব।
কোন খাবারগুলো দায়ী পেটের মেদের জন্য?
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত মদ্যপান, চিনি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার, ডুবো তেলে ভাজা খাবার, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত বাইরের খাবার, নিয়মিতভাবে লাল মাংস (রেড মিট) খাওয়া এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা অতিস্বচ্ছ চর্বি পেটের মেদ বাড়ানোর জন্য দায়ী।
ওয়ার্ক ফোর্স ইউনিভার্সিটির গবেষণা বলছে, একই তেল বারবার ব্যবহার করলে সেখানে ট্রান্সফ্যাট তৈরি হয়, যা পেটের মেদ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
কী করলে পেটের মেদ কমবে?
১. আঁশযুক্ত খাবার খান:
লাল চাল বা লাল আটার তৈরি খাবার, বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি এবং মৌসুমি ফল শরীরের জন্য দরকারি ফাইবার বা আঁশ সরবরাহ করে, যা হজমে সাহায্য করে এবং মেদ জমা রোধ করে।
২. গ্রিন-টি পান করুন:
গ্রিন-টিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানগুলো মেদ ঝরাতে সহায়ক। তাই দুধ ও চিনি দেওয়া চায়ের পরিবর্তে গ্রিন-টি পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৩. ওমেগা-৩ গ্রহণ করুন:
আখরোট, কাঠবাদাম ও সামুদ্রিক মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা পেটের মেদ কমাতে কার্যকর।
৪. স্বাস্থ্যকর ঝাল খাবার:
ঝাল মানেই ক্ষতিকর নয়। দারুচিনি, আদা, গোলমরিচ ও কাঁচামরিচ—এই প্রাকৃতিক মসলা রান্নায় ব্যবহার করলে তা মেদ কমাতে সহায়তা করে।
৫. কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যাস:
সকালে কাঁচা রসুনের কয়েক কোয়া চিবিয়ে খেলে ওজন ও পেটের মেদ কমাতে তা দারুণভাবে কাজ করে। রসুন শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে ও মেদ জমা ঠেকায়।
৬. লেবু পানির সাথে দিন শুরু:
প্রতিদিন সকালে কুসুম গরম পানিতে এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে হজম প্রক্রিয়া ভালো থাকে এবং শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে না।
৭. মানসিক চাপ কমান:
অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অলসতা পেটের চারপাশে মেদ জমার জন্য দায়ী। তাই স্ট্রেস কমাতে নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি।
৮. খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি করুন:
খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়লে হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং চর্বি জমে। তাই অন্তত ১৫-২০ মিনিট হেঁটে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৯. দীর্ঘ সময় বসে থাকা এড়িয়ে চলুন:
যাঁরা সারাদিন চেয়ারে বসে কাজ করেন, তাঁদের নিয়মিত বিরতিতে উঠে হাঁটাচলা করা জরুরি। প্রতি ৩০-৪০ মিনিট পর উঠে ১০-১৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি করলে পেটের মেদ জমার সম্ভাবনা কমে।
১০. একসঙ্গে বেশি খাবেন না:
একবারে বেশি খাবার না খেয়ে দিনে ৫-৬ বার অল্প অল্প করে খাবার গ্রহণ করুন। এতে হজম ভালো হবে এবং অতিরিক্ত ক্যালরি জমার সুযোগ কমবে।
পেটের মেদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে এখনই দৈনন্দিন জীবনে এই অভ্যাসগুলো বাস্তবায়ন শুরু করা উচিত। শরীর সুস্থ রাখার জন্য সচেতন জীবনযাপনের বিকল্প নেই।