পঙ্গু হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে জুলাই যোদ্ধাদের মারামারি: জরুরি সেবা বন্ধ, ভোগান্তি

পঙ্গু হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে জুলাই যোদ্ধাদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে
পঙ্গু হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে জুলাই যোদ্ধাদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে  © সৌজন্যেপ্রাপ্ত

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়েছেন জুলাই অভ্যুত্থানে আহতরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালের প্রধান ফটকে পুলিশ আর ভেতরে অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী।

সোমবার (১০ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে হাসপাতালের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার ইবনে মিজান জানান। তিনি বলেন, ভর্তি ছাত্রদের সাথে স্টাফদের গন্ডগোল হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সেখানে অবস্থান করছেন।

হাসপাতালটির এক কর্মী বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই এই হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর মধ্যে রবিবার রাতে ব্লাড ব্যাংকের কর্মী রফিককে মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে রোববার হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন কর্মীরা। এর মধ্যে তাদের ওপর ‘হামলার’ ঘটে বলে দাবি করেন ওই কর্মী।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মচারীদের মারামারির পর থেকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের (পঙ্গু হাসপাতাল) জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় মামারির পর থেকে হাসপাতালের জরুরি বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা মানুষজন।

সংঘাতের পর কর্মচারীরা হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ায় জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারগুলো খালি দেখা গেছে। কয়েকজন টিকিট কাটতে পারলেও কোনো চিকিৎসা পাননি বলে জানালেন।

সকালে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জরুরি বিভাগের এসেছেন হৃদয় নামের এক তরুণ। তার সঙ্গে আসা মো. আব্বাস বলেন, দুই ঘণ্টা ধরে রোগীটাকে এভাবে ফেলে রাখা হয়েছে। ব্যথায় চিৎকার করতেছে, কিন্তু কেউ অ্যাটেন্ড করছে না।

নরসিংদী থেকে দুই বছরের শিশুকে নিয়ে আসা মো. ইয়াসিন বলেন, আড়াই-তিন ঘণ্টা হলো তারা হাসপাতালে এসেছেন, কিন্তু কোনো চিকিৎসা পাননি। তিনি বলেন, বাচ্চাটা কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ে আবার জেগে উঠে কাঁদতে শুরু করে। একজন ডাক্তার বা কর্মীও নাই হাসপাতালে।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, নিটোরের সবশেষ অবস্থা জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কেনান বলেন, আমি এখন একটা মিটিংয়ে আছে। এখানে আর্মির কমান্ডিং অফিসারসহ অন্যরা আছে। একটু পরে কথা বলছি।

অভ্যুত্থানে আহতদের একজন মামুন বলেন, তিনি ৫ অগাস্ট আশুলিয়া থানার সামনে আহত হন। এখানেই ভর্তি ছিলেন। তিনি বলেন, পুরো হাসপাতাল চালায় দালাল সিন্ডিকেট। এর বিরুদ্ধে কথা বলায় সকাল ১০টার দিকে ফিজিওথেরাপি নিতে যাওয়া আমাদের কয়েকজনের ওপর হামলা চালায় হাসপাতালের একদল কর্মচারী ও দালাল।


সর্বশেষ সংবাদ