দাবি আদায়ে লাগাতার অবস্থানে প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষকরা
- আজাদ নাকির
- প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২২, ০৫:০৬ PM , আপডেট: ২১ মার্চ ২০২২, ০৮:২১ PM
অনলাইনে আবেদনকৃত প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর একসঙ্গে স্বীকৃতি ও এমপিওসহ মোট ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে প্রতিবন্ধীদের স্কুল শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
রবিবার (২০ মার্চ) সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরের সামনে তারা ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি’র ব্যানারে এই শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
আরও পড়ুন: দীর্ঘদিন পর ঢাবির জিয়া হলের বন্ধন মেস চালু
এই অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত আছেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আরিফুর রহমান অপু, সদস্য সচিব ইসরাত জাহান, সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, আন্দোলনরত শিক্ষক এবং কর্মচারীরা। গতকাল দিবাগত রাতে সরিজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রতিবন্ধীদের স্কুল শিক্ষকরা উপরে পলিথিন টানিয়ে রাত যাপনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ কেউ বসে আছেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক আরিফুর রহমান অপু দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন, এমপিওভুক্তির জন্য অনলাইন আবেদনে মোট ১৭শর মতো স্কুলের আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে স্বীকৃতি মিলে মাত্র ৪৫টি স্কুলের। যা স্কুলের সংখ্যার তুলনায় একেবারেই কম।
তিনি আরও জানান, ২০০৯ সালে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় নীতিমালা প্রণয়ন করা হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত হলেও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলো বঞ্চিত হয়ে আসছে। আর বঞ্চিত হতে চাই না, আমরা এমপিওভুক্তি চাই। সরকারী বেতন-ভাতা চাই। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
অবস্থানরত প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষকরা বলেন, আমরা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য এবং সমাজের মূলধারায় এসব প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন: ‘ডাউন সিনড্রোম শিশুদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে’
তাদের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা অনুযায়ী বিদ্যালয়সমূহের একসঙ্গে স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্ত করা, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিয়োগের তারিখ থেকে বেতন–ভাতা দেওয়া, সব বিদ্যালয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা, প্রতিবন্ধীদের বিদ্যালয়ের শিক্ষা কারিকুলাম অনুযায়ী বিনা মূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ নিশ্চিত করা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের উপযোগী স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন করা, চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা উপকরণ শতভাগ নিশ্চিত করা, প্রতিবন্ধীদের বিদ্যালয়গুলোতে আধুনিক থেরাপি সরঞ্জাম সরবরাহসহ থেরাপি সেন্টার চালু করা এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা শেষে যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানসহ আত্মনির্ভরশীল জীবনযাপনের নিশ্চয়তা দেওয়া।
উল্লেখ্য, গত চার মাস আগে এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে জাতীয় জাদুঘরের কাছাকাছি পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এরপর জাতীয় জাদুঘরের সামনেই তারা অবস্থান নেন। তখন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন তাদের দুর্দশার কথা শুনে দাবি পূরণ করার আশ্বাস দিলে তারা অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়ায় এখন তারা আবারও লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছেন।