বরেণ্য কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের জন্মদিন আজ

বরেণ্য কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান
বরেণ্য কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান  © সংগৃহীত

বাংলা সাহিত্যের বরেণ্য কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের আজ ১০৫তম জন্মদিন। ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার সবল সিংহপুর গ্রামে শক্তিমান এই লেখক জন্ম লাভ করেন। এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করবে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন। 

রবিবার(২ জানুয়ারি) এই মুক্তচিন্তকের জন্মদিন উপলক্ষে বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।

আরও পড়ুন: কান ফেস্টিভ্যালে তরুণ নির্মাতা পুরস্কার পেলো রাবি শিক্ষার্থী

বাবা মায়ের রেখে দেওয়া নাম শেখ আজিজুর রহমান হলেও লেখালেখিতে শওকত ওসমান নামে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার। প্রচণ্ড জীবনবাদী এই লেখক গল্প ও উপন্যাস লেখার মধ্য দিয়ে পরিচিত হয়ে উঠেন। সমাজের নানা অসামঞ্জস্যতা তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ বিদ্রুপের মাধ্যমে রচনায় ফুটিয়ে তুলতে পারদর্শী ছিলেন তিনি।

‘ক্রীতদাসের হাসি’ শওকত ওসমানের রচিত প্রসিদ্ধ উপন্যাস। তার রচিত অন্যান্য গল্প ও উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প’, ‘মনিব ও তাহার কুকুর’, ‘ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী’ ও ‘জননী’, সমাগম’, ‘চৌরসন্ধি’, ‘রাজা উপাখ্যান’, ‘জাহান্নাম হইতে বিদায়’ প্রভৃতি। এছাড়া স্মৃতিকথার মধ্যে রয়েছে ‘স্বজন সংগ্রাম’, ‘কালরাত্রি খ চিত্র’, ‘অনেক কথন’, ‘গুডবাই জাস্টিস মাসুদ’, ‘মুজিবনগর’ প্রভৃতি।

আরও পড়ুন: মিস আমেরিকা বিজয়ী কোরিয়ান বংশোদ্ভূত এমা ব্রয়েলস

বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৬২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৬৬ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সরকারের প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৭), ১৯৮৩ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৭ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারসহ অসংখ্য পদকে ভূষিত হন।

কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা শুরু করলেও পরবর্তীকালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও অর্থনীতি বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন শওকত ওসমান। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। এমএ পাস করার পর ১৯৪১ সালে তিনি কলকাতার গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে লেকচারার পদে নিযুক্ত হন।

আরও পড়ুন: মুঠোফোনেরও জাদুঘর চালু, থাকছে ভার্চ্যুয়াল ভ্রমণের সুযোগ

এরপর দেশ ভাগের পর তিনি পূর্ববঙ্গে চলে আসেন। ১৯৪৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ অফ কমার্সে (বর্তমানে সরকারি কমার্স কলেজ, চট্টগ্রাম) যোগ দেন এবং ১৯৫৮ সাল থেকে ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৭২ সালে স্বেচ্ছা অবসরে যান। প্রসঙ্গত, তিনি মুজিবনগর সরকারের চাকরিও করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর তিনি ৫ বছর ভারতে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন।  ১৯৯৮ সালের ২৯ মার্চ সেরিব্রাল অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হোন। ওই বছরের ১৪ মে সকালে তিনি পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন।


সর্বশেষ সংবাদ