ডিজিটাল বাংলাদেশকে টেকসই করার অন্যতম উদ্দেশ্য বিডিইউ প্রতিষ্ঠা: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

 “বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম” স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন এবং মুজিববর্ষ সমাপনী অনুষ্ঠান
“বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম” স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন এবং মুজিববর্ষ সমাপনী অনুষ্ঠান  © টিডিসি ফটো

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়, তিনি বাঙালির চিরন্তন প্রেরণার উৎস। বাঙালির যত সফলতা ও অর্জন তার মূলে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অবিচ্ছেদ্য। তার কর্ম ও আদর্শ চিরকাল আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে।

আজ রবিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (বিডিইউ) কর্তৃক আয়োজিত “বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম” স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন এবং মুজিববর্ষ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ .ক. ম. মোজাম্মেল হক এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য ও বিডিইউ এর পরিচিতি তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুনাজ আহমেদ নূর।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ .ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দানের উপযোগী করে গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি,বাংলাদেশ স্থাপন করেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশকে টেকসই করার অন্যতম উদ্দেশ্য হল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা। আমার নির্বাচনী এলাকা গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আন্তর্জাতিক মানের এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জানাই হৃদয় নিংড়ানো কৃতজ্ঞতা। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই “বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ” এর স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতার সুযোগ্য দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে, যিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের উৎকর্ষ সাধনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং তার পরামর্শেই এ বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠছে পুরো দেশের তথা বিশ্বের কাছে এক রোল মডেল হিসেবে।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০২১ এর ডিজিটাল বাংলাদেশকে টেকসই করে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ-এ পরিণত হওয়া এবং ২১০০ এর শতবর্ষ মেয়াদী ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর এর সুযোগ্য নেতৃত্বে এই বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী দুটি প্রোগ্রাম, ইন্টারনেট অব থিংস এবং আইসিটি ইন এডুকেশন এর মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে ডাটা ম্যানেজমেন্ট এন্ড এনালাইটিক্স প্রোগ্রাম, ভবিষ্যতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী রোবটিক্স,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স,মেকাট্রনিক্স,ন্যানো টেকনোলজি এবং বায়োটেকনোলজির মতো প্রোগ্রামগুলোতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা হবে।

তিনি বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুনাজ আহমেদ নূর ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনা করছেন। করোনা মহামারীর মধ্যেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের শ্রেণী কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন করেছে এবং উপাচার্যের তৈরিকৃত “প্রক্টরড রিমোট এক্সাম সফটওয়্যার” (PRExa) ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইনে পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। যা বাংলাদেশে একটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, বিশ্ব এখন জোর পায়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে। বাংলাদেশও রয়েছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে,এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যেই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী দুটি প্রোগ্রাম ইন্টারনেট অব থিংস ও আইসিটিই ইন এডুকেশন এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করছে। এছাড়াও এই বিশ্ববিদ্যালয়,নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়নের কাজ করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব প্রদান করবে।

উপাচার্য বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ভাইরাসেরটির প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রেখেছিল দেশের প্রথম ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ। করোনাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামের ক্লাসসমূহ অনলাইনে সম্পন্ন করা হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ, গ্রুপ ওয়ার্ক, প্রেজেন্টেশন এবং অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়ার কাজগুলো সম্পন্ন করেছে।

“অনলাইন ক্লাস থেকে ঝরেপড়া রোধ এবং শিক্ষায় উৎসাহিত করতে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-লাইব্রেরি ব্যবহার করার জন্য ইন্টারনেট বিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৬৩ জন শিক্ষার্থীকে টাকা প্রদান করা হয়েছে। ক্লাসগুলো ফ্লিপ পদ্ধতিতে কোলাবোরেটিভ লার্নিং প্যাডাগোজিতে নেয়া হযেছে। পরবর্তীতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে তৈরিকৃত প্রক্টরড রিমোট এক্সাম (PRExa) সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে স্থগিত পরীক্ষাসমূহ যথার্থ ও নিভর্রযোগ্যভাবে অনলাইনে শেষ করা হয়। অনলাইনে যথাযথভাবে ক্লাস ও নিজস্ব সফটওয়্যারে পরীক্ষা সম্পন্ন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।”


সর্বশেষ সংবাদ