হাবিপ্রবির প্রশাসনিক পদের দায়িত্বে এক অনুষদের প্রাধান্য, সমালোচনা
- রিয়া মোদক, হাবিপ্রবি
- প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১০ AM , আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০২ PM
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) প্রশাসনিক ২৯টি পদের মধ্যে ২৫টি পদে কৃষি অনুষদের শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কিছু শিক্ষার্থীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। অন্যদিকে কিছু শিক্ষার্থী দায়িত্বশীল শিক্ষকদের ওপর দায়িত্ব দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে জোর আলোচনা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, একযোগে সবগুলো হলের হল সুপার ও সহকারী হল সুপার পদত্যাগ করায় ফাঁকা হয়ে যায় হল প্রশাসন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি আবাসিক হলে সুপার নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে সবগুলো আবাসিক হলে সুপারের দায়িত্ব পেয়েছেন কৃষি অনুষদের শিক্ষকরা।
এছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কৃষি অনুষদের শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের ডীন, আইআরটি পরিচালক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, IQAC পরিচালক, কৃষক সেবা কেন্দ্রের পরিচালক, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স পরিচালক, লাইব্রেরীয়ান, ক্যারিয়ার এডভাইজরি শাখার পরিচালক,কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক, প্লানিং, ডেভেলপমেন্ট এন্ড ওয়ার্কস শাখার পরিচালক প্রমুখ।
একটি অনুষদ থেকে এতগুলো প্রশাসনিক পদের নিয়োগ হওয়াকে একপেশে বলে মন্তব্য করেছেন ক্যাম্পাসের বেশ কিছু শিক্ষার্থী। তাঁদের দাবি, প্রশাসনিক পদে বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি জরুরি ছিল। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, জ্যেষ্ঠতা মেনে নিয়োগ দেয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সাকিব নামের এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, একই অনুষদের শিক্ষকদের প্রশাসনিক পদে প্রাধান্য দেয়ায় ক্যাম্পাসে বৈচিত্র্য এবং ভারসাম্যহীনতা দেখা দিচ্ছে। অন্যান্য অনুষদের শিক্ষকদেরও প্রশাসনিক দায়িত্ব পাওয়ার সুযোগ থাকা উচিত ছিল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এসব বিষয়ে সমালোচনা করে ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন। এক শিক্ষার্থী লেখেন, এটা ঠিক যে, কৃষি অনুষদের শিক্ষকরা দক্ষ এবং দায়িত্বশীল। তবে, অন্যান্য অনুষদের শিক্ষকরা কি যোগ্য নন? তাদের প্রশাসনিক কাজে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া উচিত ছিল। এক অনুষদের এত প্রাধান্য দেয়ার বিষয়টি আমরা মেনে নিতে পারছি না।
অন্যদিকে, কিছু শিক্ষার্থী এই নিয়োগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। শিক্ষার্থী ফারিয়া ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাকে বলেন, দায়িত্বশীল ও অভিজ্ঞ শিক্ষকরা প্রশাসনিক পদে আছেন, তাই আমরা আশাবাদী যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজগুলো সুষ্ঠু পরিচালনা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তারা এসব প্রশাসনিক পদে নিজেদের নিয়োগ দাবি করে আসছিলেন বহুদিন থেকে। তাদের মধ্যে কয়েকজন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষকরা একাডেমিক দিক দেখবেন। প্রশাসনিক দায়িত্ব কর্মকর্তারা সামলাবেন। এই পদগুলো আমাদের ছেড়ে দেয়া হোক।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. হাসান ফুয়াদ এল তাজ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পূর্বের প্রশাসনে দায়িত্ব পাওয়া অধিকাংশই তৎকালীণ ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে ছিলেন। তাদের বাদ দিলে বর্তমানে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে কৃষি অনুষদ থেকে শিক্ষকরা দায়িত্ব পেয়েছেন। বুয়েটসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন সিনিয়রিটি মেনে নিয়োগ দেওয়া হয়, হাবিপ্রবিতেও ঠিক সেই ধারা অনুসরণ করা হয়েছে। দলীয় প্রভাব ও অস্বচ্ছতা ছাড়াই, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়েছে।