শিক্ষার্থীর হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক
- বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:৪৬ PM , আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:১৭ PM
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ফার্মেসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একই বিভাগের শিক্ষককে হুমকির অভিযোগ উঠেছে। রনি মৃধা নামের ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দায়িত্ব পালনে বাঁধা, একাধিকবার অসহ্য অপমান ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ এনে প্রতিকার ও নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন করছেন সহকারী অধ্যাপক মো: শফিকুল ইসলাম। আজ বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর তিনি অভিযোগপত্র প্রেরণ করেন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর শিক্ষাজীবনের সার্বিক নিরাপত্তা চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিভাগটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রনি মৃধাকে (২০১৮-১৯) গত সেমিস্টারে তত্ত্বীয় পরীক্ষায় অন্যের খাতা দেখে লিখতে নিষেধ করায় আমাকে উদ্ধতভাবে চোখ রাঙ্গায় এবং খাতা-কলম আঁচড়িয়ে বেরিয়ে যায়। পরবর্তীতে ফার্মাসিটিউক্যাল টেকনোলজি ল্যাব-০২ এর ট্রায়ালে দেরিতে উপস্থিতি বিষয়ে বললে সব শিক্ষার্থীর সামনেই আমার সাথে অত্যন্ত অশোভন আচরণ করে। এই বিষয় দুটিই আমি বিভাগের সভাপতি ও সহকর্মীদের যথাসময়ে অবগত করলেও বিভাগ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এরপর গত ২৯ আগস্ট বিভাগের ১ম বর্ষ ১ম সেমিস্টার পরীক্ষা পরিদর্শনকালে রনি মৃধা পাশের শিক্ষার্থীর খাতা দেখে লিখতে থাকলে একাধিকবার নিষেধ করি। সে অমান্য করলে পাশের শিক্ষার্থীকে অন্যত্র সরিয়ে দিলে অন্য পরিদর্শক সামিয়া জামানের উপস্থিতিতেই আবারও অত্যন্ত উদ্ধত আচরণ করে এবং পাশের শিক্ষার্থীকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে অত্যন্ত উদ্ধত ভাষায় আচরণ করে ও নানা হুমকি-ধামকি দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরীক্ষার কক্ষের বাইরেও অনেক বাজে গালিগালাজ করে—জানানো হয়েছে ওই অভিযোগপত্রে।
“আমি পরের দিন ৩০ আগস্ট উল্লিখিত অন্যায়ের প্রতিকার চেয়ে সভাপতি বরাবর আবেদন করি। কিন্তু বিভাগ থেকে কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ অদ্যাবধি নেওয়া হয়েছে বলে আমি অবগত নয়। সবশেষ গত ৮ নভেম্বর দুপুরে সভাপতির কক্ষে মডারেশন সভা চলার সময় বিভাগের শিক্ষকগণের উপস্থিতেই রনি মৃধা সভাপতির কক্ষের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আমার নাম ধরে চিল্লাচিল্লি করতে থাকে। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে আজও আমি সভাপতির পদক্ষেপে জানতে চাইলে তিনি আশাব্যঞ্জক কিছুই বলতে পারেনি। এমনকি অদ্যাবধি সে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দিচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে আমি অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি এবং চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রনি মৃধা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন, বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: শফিকুল ইসলাম প্রথম বর্ষ থেকেই বিভিন্ন কারণে আমাকে সহ্য করতে পারতেন না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। প্রথম থেকেই তার সাথে একটি কমিউনিকেশন গ্যাপ থাকার কারণে ল্যাব বা সেন্ট্রাল ভাইভায় সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পরও সে আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ নাম্বার দেয়।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ওই শিক্ষক আমার এই ক্ষতি করছেন। প্রশাসনের প্রতি আমি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল, আশা করি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে তারা বিষয়টির সমাধান করবেন। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর শিক্ষাজীবনে সার্বিক নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, আমরা অভিযোগ পত্র পেয়েছি এবং সেটা ভিসি স্যারকে অবগত করেছি। তিনি এখনো কোন সিদ্ধান্ত দেননি।
প্রসঙ্গত, গত ৬ নভেম্বর রনি মৃধার বিরুদ্ধে ফিশারিজ এন্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে হলে গিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করার অভিযোগের তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে।