পবিপ্রবির সাময়িক বহিস্কৃত ছাত্রলীগ সভাপতি সাগরের যত কান্ড

পবিপ্রবির সাময়িক বহিস্কৃত ছাত্রলীগ সভাপতি সাগর
পবিপ্রবির সাময়িক বহিস্কৃত ছাত্রলীগ সভাপতি সাগর  © সংগৃহীত

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সাময়িক বহিস্কৃত সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগরের থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছে। সামনে আসছে একের পর এক অভিযোগ।  

সাগরের বিরুদ্ধে পাওয়া এ পর্যন্ত অভিযোগগুলো হল- ২০১৭ সালে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার, ২০১৮ সালে তৎকালীন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোসাহেদুল ইসলাম সাদির সাথে খারাপ আচরণের কারণে গণপিটুনির শিকার হয়ে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত, ২০২০ সালে বিশ্ববদ্যালয়ের ২য় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতির পতাকা চুরি 

পবিপ্রবি সভাপতির নামে আরও অভিযোগ রয়েছে, ২০২১ সালে চাকরির প্রলোভনে টাকা আত্মসাতের কারণে সাদিয়া আক্তার দোলা নামের এক মহিলার অভিযোগ করেন, চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে ব্যবহৃত বাসের তেল নিয়ে পাম্পের টাকা পরিশোধ করেননি এবং পর্যায়ক্রমে ৩ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা চাঁদাবাজিসহ নির্মাণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন।

গড়হজচব৭৮

এসকল অপকর্মের জেরে চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থের সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পবিপ্রবি সভাপতি সাগরকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়।

আরও পড়ুন: চবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ছয়

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম সাগরকে তার দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হলো। 

New Project - 2023-10-20T162503-011

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে একাধিকবার দুর্ব্যবহার, উপাচার্যের বাসভবনে আম চুরি করে ধরা পড়া, পবিপ্রবি'র টিএসসি হলের প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা এবং হল ডাইনিংয়ের বকেয়া পরিশোধ না করা, এক শিক্ষার্থীর লাপটপ আটকানোসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণেরসহ নানা অভিযোগ রয়েছে পবিপ্রবি সভাপতির বিরুদ্ধে।  

সম্প্রতি, এক ছাত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক থাকায় গভীর রাতে সেই ছাত্রীকে হলে রেখে আসতে গেটে এলে ইউনুস আলী নামের এক কর্মচারী বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউনুস আলীকে মারধর করেন সাগর। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কর্মচারী ইউনুস আলী বলেন, অনেক রাত হওয়ায় আমি তাদের হলের নিয়ম অনুযায়ী ঢুকতে বলি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করেন। 

এছাড়াও সাগরের পাম্পের টাকা পরিশোধ না করার বিষয়ে পাম্প ম্যানেজার জামাল বলেন, সমাবেশের দিন ৩৩ হাজার টাকার তেল নেয় সাগর। কিন্ত সে টাকা পরিশোধ না করেই তিনি চলে যায়। পরে একাধিকবার টাকা পাওয়ার চেষ্টা করা হলেও আজও পাওয়া যায় নি। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক মো. আসিফ ইকবাল অনিক সম্পর্কে সাগরের দুলাভাই, যার মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করে সভাপতি পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন। এবারও সেই দুলাভাইয়ের মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করে সাময়িক বহিস্কারাদেশ উঠিয়ে সভাপতি পদে বহাল থেকে সদর্পে ক্যাম্পাসে আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন সাগর। 

e8af8d43-dc8c-4b5c-9589-59450b0ff89d

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরাফাত ইসলাম খান সাগর বলেন, এগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ভিন্ন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয় নি। 

আরও পড়ুন: জবি ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির দায়ে ছাত্র গ্রেপ্তার

তবে কয়েকটি অপরাধের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। আপরাধের ধরন ও মাত্রা অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ড সিদ্ধান্ত নিবেন। 

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কয়েকটি তদন্ত কমিটি করেছি, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আসলে শৃঙ্খলা বোর্ডের মাধ্যমে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। 


সর্বশেষ সংবাদ