শাবিপ্রবির অধিকাংশ পানির উৎসেই অতিরিক্ত আয়রন: গবেষণা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বিভিন্ন স্থানে প্রাপ্ত পানির উৎসে আয়রনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্রের অর্থায়নে পেট্রোলিয়াম ও খনি-কৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে গবেষণা দলটিতে সহকারী হিসেবে ছিলেন শিক্ষার্থী সাইদুজ্জামান চৌধুরী।

তাদের গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ৯টি স্থানের পানি পরীক্ষা করে আটটি স্থানে অতিরিক্ত মাত্রায় আয়রন পাওয়া গেছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, এর মধ্যে মাত্র একটি স্থানে পানযোগ্য নিরাপদ পানি পাওয়া গেছে এই গবেষণায়। জিওফিজিক্যাল ইলেকট্রিক্যাল রেসিসটিভিটি সার্ভের (ভার্টিক্যাল ইলেকটিক্যাল সাউন্ডিং) মাধ্যমে পানি পরীক্ষা করা হয়।

সম্প্রতি গবেষণাপত্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নাল ও ইনোভেটিভ এক্সপ্লোরেশন মেথডস ফর মিনারেল ওয়েল, গ্যাস এন্ড গ্রাউন্ড ওয়াটার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বইয়ের একটি অধ্যায়ে প্রকাশিত হয়েছে।

এতে দেখা গেছে, জায়গাগুলোর মধ্যে মিলিগ্রাম বা লিটার এককে সহনশীল মাত্রা ০.৮১ আয়রন পাওয়া যায় যথাক্রমে সৈয়দ মুজতবা আলী হলসংলগ্ন টিলারগাঁওয়ে। এর বাইরে অ্যাকাডেমিক ভবন-ডি তে ১.২২, আইআইসিটি ভবনে ১.৩৪, আবাসিক এলাকা লন্ডনি বাড়িতে ১.৪১. শিক্ষকদের ডরমিটরিতে ২.১৪, শহীদ মিনারে ২.৭২, বাসের গ্যারেজে ২,৮২, শাহপরান হলে ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে ৯ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া গেছে প্রতি লিটারে।

আরও পড়ুন: মাভাবিপ্রবির নিয়োগে প্রথম-দ্বিতীয়কে ছাপিয়ে শিক্ষক হয়েছেন ১১তম প্রার্থী

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং দ্যা এনভায়রনমেন্ট কনসারভেশনের শর্তমতে, পানির আদর্শিক আয়রনের মান ০.৩ থেকে ১.০ মিলিগ্রাম প্রতি লিটারে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সহনশীল মাত্রায় রয়েছে খনিজ লবণ। ফলে এই এলাকাগুলো থেকে খুব সহজে নিরাপদ পানি সরবরাহ করা যাবে কিনা— যাচাই করে দেখছেন গবেষকদলের সদস্যরা।

গবেষণায় ১.২২ থেকে ২.৮২ মিলিগ্রাম পর্যন্ত আয়রনযুক্ত পানি বোতলের ভেতর এক বছরের বেশি সময় সংরক্ষণ করে কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। ফলে এসব স্থানের আয়রনের পরিমাণ যাচাই করতে পুনরায় গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী এ জায়গাগুলোতে আয়রন ব্যতীত পানির পিএইচ, টারভিডিটি, কনডাক্টিভিটি, টিডিএস, টিএস, ডিও, আর্সেনিক ও পিউরিফাই প্লান্ট বসানো হবে।

গবেষকদলের প্রধান অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ স্থান থেকে পানি সংগ্রহ করলে তা সরাসরি। পান করা যাবে। কোনো বাড়তি খরচ করতে হবে না। আর কম আয়রনের উৎস থেকে পানি সরবরাহ করলে ফিল্টারিং বাবদ খরচ কমে যাবে।

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. কবির হোসেন বলেন, গবেষণা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য জায়গাগুলোতেও ওয়াটার পিউরিফাই প্লান্ট বসানো হবে।


সর্বশেষ সংবাদ