যবিপ্রবিতে শিক্ষার্থী নির্যাতন : ধরাছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্ত ২ ছাত্রলীগ কর্মী

অভিযুক্ত শোয়েব আলী ও সালমান এম রহমান।
অভিযুক্ত শোয়েব আলী ও সালমান এম রহমান।  © ফাইল ছবি

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে নির্যাতন ও দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীর ঘটনায় মামলা দায়েরের ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো অভিযুক্ত ২ ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

নির্যাতনের শিকার ইসমাইলের সহপাঠী আবির বলেন, ঘটনার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিরা এখনো গ্রেফতার হয়নি এটা উদ্বেগের বিষয়। এত বড় একটি ঘটনার পরও আসামিরা গ্রেফতার না হওয়া ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটির সঠিক বিচার হবে কি-না তা নিয়ে আমরা সংশয়ে আছি। প্রশাসনকে দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে সঠিক বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন : যবিপ্রবির সেই দুই ছাত্রলীগকর্মীর বিরুদ্ধে এবার মামলা

তবে পুলিশের দাবি আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। তারা (অভিযুক্তরা) বারবার স্থান পরিবর্তন করার কারণে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। আমাদের টিম সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য।

এর আগে গত সোমবার (৩ এপ্রিল) যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মোঃ আশরাফুজ্জামান জাহিদ বাদি হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় এই মামলা দায়ের করেন।মামলায় যবিপ্রবির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ শোয়েব আলীকে ১ নম্বর ও সালমান এম রহমানকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী এনএফটি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ ইসমাইল হোসেন কে আগে থেকেই দশলক্ষ টাকা চাঁদা দাবিসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিল অভিযুক্ত সালমান ও শোয়েব। তারই ধারাবাহিকতায় (২ এপ্রিল) দুপুর ১টায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ফোন দিয়ে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধর করে চাহিদা অনুযায়ী দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অপারগতা প্রকাশ করলে হত্যার হুমকি প্রদান করে অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে অভিযুক্ত সালমান ও শোয়েব তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চার ঘন্টা আটকে রেখে বেল্ট, রড, পাইপ দিয়ে মারধর করে জখম করে। এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বন্ধু মারুফ, পারভেজ, নোমানসহ আরো অনেকেই তাকে হলের মধ্যে না পেয়ে খোঁজ করে। এক পর্যায়ে আনুমানিক বিকেল পাঁচটার দিকে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষে অচেতন অবস্থায় দেখে হল প্রভোস্ট ড. মোঃ আশরাফুজ্জামান জাহিদ কে ফোন দেন সহপাঠীরা। পরবর্তীতে হল প্রভোস্ট এসে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আরও পড়ুন : যবিপ্রবিতে মারধরে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

উল্লেখ্য, এর আগেও এই দুজনের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্রদের শিবির উপাধি দিয়ে চাঁদা দাবি করারও অভিযোগ তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থী। তারা দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি সোহেল রানার অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে সাম্প্রতিক এই ঘটনার পর গত রোববার (২ মার্চ) হল পরিদর্শন করেন যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন। পরিদর্শন শেষে হল প্রভোস্ট আশরাফুজ্জামান জাহিদ কে রুম সিলগালা করার নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে হল প্রভোস্ট ওই রুমটি সিলগালা করে দেন। এছাড়াও এই ঘটনার উপযুক্ত বিচারের দাবিতে গতকাল সোমবার যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর শিক্ষক ও সহপাঠীরা।

ইতোমধ্যে অভিযুক্ত দুইজনকে শহীদ মসিয়ূর রহমান হল থেকে সাময়িক ও পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence