হল কিংবা ল্যাব নয়— বশেমুরবিপ্রবির উন্নয়নে নির্মাণ হবে হাইটেক পার্ক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটাে

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করেছিল গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে প্রায় ১২ বছর পার হলেও এখনও সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। এখনও বিশ্ববিদ্যালয়টির ৩৪টি বিভাগেই রয়েছে শিক্ষক সংকট ও ক্লাসরুম সংকট; সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড অ্যান্ড এগ্রোপ্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ারিং, এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন, কৃষি, ফিসারিস অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্সসহ প্রায় ১৫টি বিভাগে রয়েছে ল্যাব সংকট; আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী।

তবে এই সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব প্রদান না করে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসন গুরুত্ব প্রদান করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে হাইটেক পার্ক নির্মাণে। আর এর কারণ হিসেবে দাবি করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন। এমনকি এক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতামতকে উপেক্ষা করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫ একরের অভ্যন্তরে হাইটেক পার্ক নির্মাণের অনুমোদন প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির রিজেন্ট বোর্ড।

এর আগে গত ৩১ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে উপাচার্য আশ্বাস দিয়েছিলেন যে ৫৫ একরের মধ্যে হাইটেক পার্ক হবেনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে হাইটেক পার্ক নির্মাণ করতে হলে নতুন জমি অধিগ্রহণ করে পার্ক নির্মাণ করা হবে। পরবর্তীতে বিষয়টি বাতিল করে দিয়েছিল রিজেন্ট বোর্ডও। তবে সম্প্রতি অনেকটা চুপিসারেই বিষয়টি পুনরায় রিজেন্ট বোর্ডের এজেন্ডাভুক্ত করে পাস করানো হয়।

বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পরপরই এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুকুর রহমান বলেন, ‘আমরা আমাদের ক্লাসরুম চাই, দক্ষ শিক্ষক চাই, ল্যাবরুম চাই,ক্যাফেটেরিয়া চাই, আবাসন চাই,শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ চাই, জিমনেসিয়াম চাই, মেইন গেটের কাজটা শেষ হোক এটাই চাই। কিন্তু উপাচার্য চাচ্ছেন আইটি পার্ক। এর কারণ কি?’ 

শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ইতোমধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিও। শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. কামরুজ্জামান এবং ড. মো. আবু সালেহ সাক্ষরিত বিবৃতিতে শতভাগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতামত উপেক্ষা করে রিজেন্ট বোর্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে হাইটেক পার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৫৫ একরের বাইরে নতুন জমি অধিগ্রহণ করে উক্ত স্থানে হাইটেক পার্ক নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন, ‘স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে হাইটেক পার্কটা হোক। হাইটেক পার্ক নির্মাণ হলে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীরাই উপকৃত হবে। এখানে বিভিন্ন প্রজেক্টের ট্রেনিং হবে। শিক্ষার্থীরা দক্ষ করে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবে। চাকরির ক্ষেত্রে আরো বেশি উপকৃত হবে।"

তিনি আরো বলেন, ‘হাইটেক পার্ক নির্মাণ শেষ হলে আমাদের আরও ১৫ একর জমি বর্ধিত করে দিবেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। আর আইটি পার্ক আমাদের মালিকানায়ই থাকবে। শিক্ষার্থীরা কনফারেন্স রুমসহ যেকোন রুম ব্যবহার করতে পারবে।"


সর্বশেষ সংবাদ