শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এনএসইউর কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের সেই নথি গায়েব

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এনএসইউর কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের সেই নথি গায়েব
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এনএসইউর কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের সেই নথি গায়েব  © ফাইল ছবি

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ নিয়োগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিমত দেওয়া সেই নথিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে খোয়া গিয়েছে। কোথা থেকে কীভাবে খোয়া গেছে সেই তথ্যও নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে হারানোর সঠিক তথ্য না জানলেও এ ঘটনা তদন্তে এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক নথিতে অভিমত দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পরে কৌশলে ঘষামাজার মাধ্যমে ওই নথির সিদ্ধান্তই বদলে দিয়েছিল একটি জালিয়াত চক্র। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি মামলাও করা হয়েছিল। সম্প্রতি এ নথিটিই মন্ত্রণালয় থেকে খোয়া গিয়েছে।

আরও পড়ুন: মিরপুর কলেজের অধ্যক্ষের দুর্নীতির তদন্ত করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অভিমত দেওয়া সেই নথিটি প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় ছিল। তাই কোন ধাপ থেকে নথিটি হারিয়েছে, সেটি অনুসন্ধানের জন্যই একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: স্কুলে ভর্তিতে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না: শিক্ষা মন্ত্রণালয়

এর আগে, গত বছর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো তিনজনের নামের প্রস্তাব সংবলিত ওই নথিতে প্রধানমন্ত্রীর অভিমতের জন্য তার দপ্তরে পাঠানো হয়। পরে তা কার্যালয় থেকে বের করে জালিয়াতির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত বদলে দেয় একটি চক্র।

আরও পড়ুন: ৩২ হাজার ২৮৩ জনের ফরম স্বরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

পরে আবার সেই নথি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রপতির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বঙ্গভবনে পাঠানো হয়। জালিয়াতির ঘটনাটি ধরা পড়লে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত ৫ মে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। পরবর্তী সময়ে আদালত থেকে মামলাটির তদন্তের ভার দেয়া হয় দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক)। এ ঘটনায় প্রাথমিক অনুসন্ধানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি তরিকুল ইসলাম মুমিন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার ‘সম্পৃক্ততা’ বেরিয়ে আসে।

আরও পড়ুন: ‘বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষা বোর্ড’ নামে কোন বোর্ড নেই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়

মামলার এজাহারে বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী নথি দেখে অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। কিন্তু চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর আগেই সেটি বাইরে চলে যায় এবং প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বদলে প্রথম দুজনের নামের পাশে ‘ক্রস’ চিহ্ন দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যজনের নামের পাশে সম্মতিজ্ঞাপনের ‘টিক’ চিহ্ন দেয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ