৩৫ কোটি পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ আবারও হাতিয়ে নিচ্ছে একই চক্র

শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই
শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই  © সংগৃহীত

আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য এবার প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কোটি কপি পাঠ্যবই ছাপানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। বিশাল সংখ্যক এ পাঠ্যবই ছাপানোর জন্য মোট ৮১৪ লটে বই ছাপানো হবে। এর মধ্যে গত মঙ্গল ও বুধবার ২৯৮ লটের দরপত্র খোলাও হয়েছে। 

এ লট নিজেদের মধ্যে মধ্যে রাখতে এবার ভিন্ন কৌশল নিয়েছে অসাধু মুদ্রণকারীদের চক্র। তারা আগেভাগেই নিজেদের মধ্যে ‘সমঝোতা’ করে দরপত্রে অংশ নিচ্ছে। এ পর্যন্ত যেসব লটের দরপত্র হয়েছে, সেগুলোর কোনোটিতে একটি, কোনোটিতে দুটি, কোনোটিতে তিনটি দরপত্র জমা পড়েছে। যে লটে তিনটি দরপত্র পড়েছে, সেগুলোও একই মালিকের তিন প্রতিষ্ঠানের।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, আগের বছরগুলোতে একেকটি লটে কমপক্ষে ১৪-১৫টি দরপত্র জমা পড়লেও এবার এ পর্যন্ত অধিকাংশ লটেই একটি বা দুটি দরপত্র জমা পড়েছে। কোনো কোনোটিতে তিনটি। তবে যেসব লটে একাধিক দরপত্র পড়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগ দরদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো একই মালিকের। ফলে প্রতিযোগিতা থাকছে না। বিভিন্ন পর্যায়ে অনুমোদন শেষে এসব প্রতিষ্ঠানকেই কার্যাদেশ দিতে হবে এনসিটিবিকে। বলতে গেলে ঘুরেফিরে একই চক্র পাচ্ছে বই ছাপানোর কাজ।

এনসিটিবির একটি সূত্র জানায়, এবার দরপত্র খোলার পর বোঝা গেছে সরকারের প্রাক্কলিত দর অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্র জমা দেওয়ার আগেই জেনে গেছে। এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট কিছু অসাধু কর্মকর্তা এটি ফাঁস করেছেন। এ ছাড়া দরপত্র খোলার তারিখও পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে এনসিটিবির তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তাঁদের একজন বর্তমানে এনসিটিবিতে নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মুদ্রণকারী গণমাধ্যমকে জানান, গত মঙ্গল ও বুধবার যেসব লটের দরপত্র খোলা হয়েছে, সেগুলোতে প্রতিযোগিতা ছাড়াই অধিকাংশ কাজ পাচ্ছে নিজেদের মধ্যে সমঝোতাকারী কয়েকটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান। সবই সিন্ডিকেটের কারসাজি।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এবার দশম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপাতে হবে বলে ছাপার খরচ বাড়বে। সবকিছুই নিয়ম অনুযায়ী স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা হচ্ছে।

 

সর্বশেষ সংবাদ