বাংলাদেশে সেবাখাতে বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে: ব্রিটিশ হাইকমিশনার

ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন  © সংগৃহীত

সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের সেবাখাতসমূহ বিশেষ করে ব্যাংকিং, স্বাস্থ্য, তথ্য-প্রযুক্তি এবং শিক্ষা খাতে ব্রিটিশ বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন।

হাইকমিশনার জানান, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ। তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের স্টার্টআপদের জন্য ব্রিটিশ ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের বিনিয়োগ প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এ লক্ষ্যে বাংলাদেশস্থ ব্রিটিশ দূতাবাস কাজ করছে।

সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে জোর দিয়ে তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিধারা অব্যাহত রাখতে বেসরকারি বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি করতে হবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ব্যবসা পরিচালনা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নয়ন করতে হবে। এ জন্য সরকার ও বেসরকারিখাতকে একযোগে কাজ করতে পারে।

রবিবার (২৯ আগস্ট) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা: প্রেক্ষিত সেবা খাত’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এছাড়াও বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, বেসিস’র সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, এসবিকে টেক ভেঞ্চারস’র প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সনিয়া বশির কবীর, বাংলাদেশ সিমপ্রিন্টস টেকনোলোজি লিমিটেডের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. আসাদ-উর-রহমান নীল, জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড’র কো-ফাউন্ডার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদনান ইমরান এবং এমএফ এশিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির তানভীর আহমেদ ও ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি এন কে এ মবিন আলোচনায় যুক্ত হন।

স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩.৭৫১ বিলিয়ন, যা বিগত অর্থবছরের চেয়ে ৮.৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২.৩৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এর মধ্যে ৬.৫ শতাংশ এসেছে সেবাখাতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ব্রেক্সিট যুক্তরাজ্যের জন্য বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশের সেবাখাতসহ ব্যাংকিং, জ্বালানি, অবকাঠামো, কেমিক্যাল, পর্যটন, মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা আরও বেশি হারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে।’

এ সময় তিনি বাংলাদেশ ও বৃটেনের মধ্যকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর না হওয়া পর্যন্ত ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে জিএসপি সুবিধা বহাল রাখার প্রস্তাব করেন।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস’র (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর তার বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বের ৮০টি দেশে নিজেদের উৎপাদিত তথ্য-প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার রফতানি করছে বাংলাদেশ। যার স্থানীয় বাজার মূল্য ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ প্রতিবছর ২২ হাজারের বেশি আইটি ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করে থাকে। এ ধরনের মানবসম্পদ ব্যবহারের করে ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন।’

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, ‘ইতোমধ্যে সারাদেশে ৮টি আইটি পার্ক বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৪টির কাজ সম্পন্ন হবে। হাইটেক পার্কগুলোতে ইতোমধ্যে ১৬০টি দেশি-বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগ করেছে, যেখানে ২১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’


সর্বশেষ সংবাদ