অবেলায় না ফেরার দেশে ঢাবি ছাত্র মামুন

  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক ছাত্র মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন। পড়াশোনা শেষ করে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে চাকরিও পেয়েছিলেন। ট্রেনিংয়ে যোগদান করেন রাজশাহীর সারদায়।

তবে সাত মাস ট্রেনিং করার পর হঠাৎ ধরা পরে নিউরো ক্যান্সার। ট্রেনিং ছেড়ে ভারতে গিয়ে চিকিৎসাও করিয়েছিলেন। সেখানে কয়েকটি কেমোফেরাপী দেওয়া হলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। ফলে বাড়িতেই ছিলেন তিনি। সেখানেই আজ বুধবার সকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন। থাকতেন সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায়। তার মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে পড়েছেন সহকর্মী, বন্ধু থেকে শুরু করে নিকটজনরা।

আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিভাগের বন্ধু ও একইসঙ্গে এসআই চাকরি পাওয়া সুব্রত দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ট্রেনিং চলার সময়ই তার রোগটা ধরা পড়ে। ভারতে কয়েকটি কেমো দেওয়ার পরও লাভ হয়নি, বাড়িতেই ছিলেন। আজ সকাল ১০টার দিকে সে না ফেরার দেশে চলে গেছে।’

সারদায় একইসঙ্গে ট্রেনিং করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র জুয়েল বর্মণ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘মামুন বড় অসময়েই চলে গেল। আজ সকালেই তার মৃত্যুর খবরটা শুনলাম। খুব খারাপ লাগছে।’

মামুনের স্মৃতিচারণ করে সুমাইয়া জান্নাত নামে এক বান্ধবী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘২ মাস আগেও না তুই এফবিতে আসতিশ রেগুলার, এখন কোথায় চলে গেলি? তুই নেই কিন্তু দেখ তোর আইডি কতটা জীবন্ত। এভাবেই বেঁচে থাকবি আমাদের মাঝে, আল্লাহ তোকে নাজাত দান করুন...আমিন।’

মামুনের এসএম হলের বড় ভাই নাদিম মাহমুদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার হলের ও ডিপার্টমেন্টের ছোটভাই মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন না ফেরার দেশে চলে গেছে! খবরটা জেনে স্মৃতি হাতড়াতে লাগলাম! অন্ত নেই স্মৃতির! আমার খুব কাছের যে ছিল মামুন তেমনটি বলব না! সবার সাথে ইন-জেনারেল সম্পর্ক তাই খুব কাছের বলে কেউ নেই আমার!

সবথেকে বেশি স্মৃতি মামুনের সাথে খেলার মাঠে, দুইবার ক্যাপ্টেন থাকাকালীন মামুন ছিল আমাদের দলের একজন ভাইটাল প্লেয়ার। প্র‍্যাক্টিস থেকে শুরু করে খেলায় সবকিছুতে মামুন দারুন মাতিয়ে রাখতো! খেলার মাঠে একদিনের কথা খুব মনে পড়ে; সেদিন মামুন তার জিএফকে নিয়ে এসেছিল খেলা দেখাতে। দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে সেদিন মামুনকে খেলানোর সুযোগ ছিল না; মামুন ড্রেস আপ করে রেডি, মামুনকে বললাম- মামুন, তোমার আজ একটু পরে নামতে হচ্ছে।

মামুন বেশ ধাক্কা খেল মনে হয় তবু আস্তে করে বলল ঠিক আছে ভাই। সেদিন মামুন আমার সাথে এটা নিয়ে জোরাজুরি করতে পারতো কিংবা রিঅ্যাক্ট করতে পারতো। সেদিন বিষয়টা লক্ষ করে দোয়া করেছিলাম অনেক বড় হবার। 

দারুন প্রাণোচ্ছল আর ফ্রেশ জীবনবোধের ছেলে মামুনের সাথে ছিল বন্ধুর মত সম্পর্ক! আমাদের আড্ডায় সবকিছু নিয়ে আলোচনা চলতো, বেশ হাসাতে পারত ও। মনে আছে একদিন আড্ডায় মামুন আমাকে পরামর্শ দিল ভাই প্রেম টেম কইরেন না, করলেও এক দু’বছরের মধ্যে বিয়ে করবেন, নইলে ঝামেলা।

হলে আমাদের ডিপার্টমেন্টের ইফতার পার্টির দিন আমি আর মামুন কতবার চকবাজার ইফতার কিনতে গেছি! এসব আয়োজনে মামুন না থাকলে যেন জমতো না! বড় অবেলায় ডাক এসে গেল তোমার যে ডাকের অপেক্ষায় আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন তিনি! ভাল থেকো ভাই!’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence