ভর্তি জালিয়াতদের ছাত্রত্ব বাতিলের পক্ষে ডাকসুর এজিএস

  © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) এজিএস এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। এর আগে তাদের বহিষ্কারের দাবিতে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। একই সঙ্গে ডাকসু নেতাদের এ ব্যাপারে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তারা।

এরই প্রেক্ষিকে জালিয়াতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানালেন সাদ্দাম। মঙ্গলবার দুপরে ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সকলের ছাত্রত্ব বাতিল এবং প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুভবোধের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাতেই হবে।’

ডাকসু এজিএসের এ অবস্থানে সন্তোষ জানিয়েছেন অনেকে। আমির হোসেন মুরাদ নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এমনটিই চেয়েছিলাম, ধন্যবাদ জালিয়াতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলার জন্য।’

জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংখ্যাই বেশি। ডাকসু নেতারা এটি নিয়ে ভূমিকা না রাখারও নিন্দা জানিয়েছেন তারা।

সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বটতলায় সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে ‘ভর্তি জালিয়াতবিরোধী’ সভায় অংশ নিয়েছেন একদল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতি এ ব্যাপারে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানায় এবং ভর্তি জালিয়াতিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সহযোগিতা কামনা করেন।

সভায় পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করেন তারা। এসবের মধ্যে রয়েছে-জালিয়াতদের বহিস্কারের জন্য প্রশাসনকে স্মারকলিপি প্রদান করা; প্রতিটি অনুষদ এর ডিন এবং কয়েকটি ডিপার্টমেন্টের (যাদের জালিয়াত সংখ্যা তুলনামূলক বেশি) চেয়ারপার্সন বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে; ডাকসু নেতৃবৃন্দকেও এ ব্যাপারে সোচ্চার হওয়ার জন্য স্মারকলিপি প্রদান করা; এসব লিগ্যাল একশনগুলো নেয়ার পর ক্যাম্পাসে জালিয়াতদের ছবিসহ ব্যানার, লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে জনমত গড়ে তুলা এবং তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট এর আহ্বান জানানো।

এসবের পরও যদি প্রশাসন কোন সিদ্ধান্ত না নেয় তাহলে সবাইকে নিয়ে আন্দোলনের ডাক দেবে বলে ওই সভায় সিদ্ধান্ত আসে।

জানতে চাইলে ওই সভায় অংশ নেয়া আসিফ মাহমুদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ভর্তি জালিয়াতির মাধ্যমে অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। নানাভাবে প্রমাণও পাওয়া গেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ভর্তি জালিয়াতিদের বহিস্কারের জন্য প্রশাসনের কাছে সুপারিশ জানানোর জন্য সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি জালিয়াতি করে ভর্তি হয়েছেন বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনার অনেকের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। বর্তমানে এ মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। শিগগিরই আদালতে এই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম।


সর্বশেষ সংবাদ