ছাত্রীকে ‘বাল্যবিয়ে’ করতে এসে ধোলাই খেলেন ৫৪ বছরের খাদ্য কর্মকর্তা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২২, ১১:০৫ AM , আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২২, ১১:০৫ AM
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে কলেজছাত্রীকে বিয়ে করতে এসে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন ইসকে আব্দুল্লাহ (৫৪) নামে এক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জনতার রোষানল থেকে তাকে উদ্ধার করেন সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান। স্থানীয়দের দাবি, প্রথম স্ত্রীর ভূয়া অনুমতি সনদ নিয়ে এবং এক কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করতে আসেন ওই কর্মকর্তা।
ইসকে আব্দুলাহ দিনাজপুর সদরের সুইহারী (খালপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের রাণী শংকৈল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা। স্থানীয় ইউপি সদস্য বলেন, ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় কেন্দ্র পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইসকে আব্দুল্লাহ। কেন্দ্রে পরিচয় হয় এক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে। পরে তার কাছ থেকে মোবাইল নম্বরও নেন ওই কর্মকর্তা।
এরপর কল দিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিন বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে শিক্ষার্থীর বাড়িতে। সঙ্গে ছিলেন কুড়িগ্রাম সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব হাসান ও নাগেশ্বরীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুর রহমান। তারা বিয়েতে সাক্ষী হতে রাজি হননি। ওই খাদ্য কর্মকর্তার কোনো স্বজনও হাজির হননি। একপর্যায়ে তর্ক-বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
এ সময় স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কর্মকর্তাকে গণধোলাই দেয়। পরে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থল থেকে তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
ওই কর্মকর্তার স্ত্রী জানান, তাদের ঘরে দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে। মেয়ের বিয়েও হয়েছে। আরেক মেয়ে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার স্বামী কিছু দিন ধরে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য তাকে চাপ দেন। সম্মতি না দেওয়ায় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। এ নিয়ে তিনি যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন।
আরো পড়ুন: বিয়ে ঠিক হয়েছে প্রেমিকের, সন্তানের পিতৃপরিচয় চায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী
ইসকে আব্দুল্লাহ বলেন, প্রথম স্ত্রীর দু’টি অপারেশনের কারণে শারীরিকভাবে অপারগ। ফলে দ্বিতীয় বিয়ে করতে এসেছি। মেয়ের বয়স কম, এটা জানা ছিল না। তাই হট্টগোল হয়েছে। বরযাত্রী হিসেবে আসা দু'জন জানান, ইসকে আব্দুল্লাহ তার আত্মীয়র বাড়িতে দাওয়াতের কথা বলে রৌমারীতে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন বিয়ের আয়োজন। এসময় আব্দুল্লাহ দু’জনকে বিয়ের সাক্ষী হতে বলেন। তারা রাজি না হওয়ায় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
ওই শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, কুড়িগ্রাম সদরে ৩০ শতক জমিতে বাড়ি করে দেওয়া ও ১০ ভরি স্বর্ণাঙ্কারসহ টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তার মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ছুটিতে রয়েছেন। তার বিষয়ে আর কিছু জানা নেই।