কলেজছাত্রীর অশ্লীল ছবি বানিয়ে প্রচার, যুবকের ৭ বছর কারাদণ্ড

দণ্ডিত শ্যাম দাস
দণ্ডিত শ্যাম দাস  © সংগৃহীত

রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্রীর অশ্লীল ছবি বানানোর দায়ে শ্যাম দাস (৩৯) নামে এক যুবকের ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরের দিকে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত শ্যাম দাস নাটোর সদরের লালবাজার এলাকার মৃত নারায়ন চন্দ্র দাসের ছেলে। রায় ঘোষণাকালে আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন তিনি। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

এই মামলার প্রধান আসামি ছিলেন লালবাজার এলাকার নরেন্দ্রনাথ চন্দ্রের ছেলে বাবুল চন্দ্র। মামলা চলাকালীন তিনি মারা যান। 

সাইবার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়েছেন শ্যাম দাস। তাকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে, আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

আদালত বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে জরিমানার টাকা ভিকটিম পাবেন। আর মামলার হাজতবাস মূল কারাদণ্ড থেকে বাদ যাবে। 

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৪ মে প্রতিবেশী বাবুল চন্দ্র ও শ্যাম দাসের নামে নাটোর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন লালবাজার এলাকার বাসিন্দা ডলি রাণী সাহা। মামলা নম্বর ৪৩। ওই সময় ডলি রাণী সাহা রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রী কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। 

মামলার বিবরণে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, বাবুল চন্দ্র ওই নারীকে পথে-ঘাটে উত্ত্যক্ত করাসহ কুপ্রস্তাব দিচ্ছিলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় অপহরণ এমনকি অশ্লীল ছবি বানিয়ে ছড়ানোর হুমকি দেন।

এক পর্যায়ে প্রতিবেশী যুবক শ্যাম দাসের সাহায্যে মোবাইলে ওই নারীর ছবি তুলে অশ্লীল ছবির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে কম্পিউটারে অশ্লীল ছবি বানানো হয়। 

২০১৪ সালের ১০ মে বাড়ির সামনে ওই নারীর পথ আটকান বাবুল চন্দ্র। এরপর কম্পিউটারে বানানো অশ্লীল ছবি দেখিয়ে ফের কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হলে সেই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন।

পরে ঘটনাটি বাবাকে জানান ভুক্তভোগী। ওই সময় নিজেকে র‍্যাবের সোর্স পরিচয় দিয়ে ওই নারীর বাবার ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন বাবুল। টাকা না পেয়ে শেষে সেই অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেন তিনি। তাতে ওই নারীর কয়েকবার বিয়ে ভেঙে যায়। সামাজিক ও পারিবারিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় তার। 

আইনী প্রতিকার পেতে ২০১৪ সালের ২৪ মে বাবুল চন্দ্র ও শ্যাম দাসের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী। পরে মামলাটি রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালে আসে। পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। শুনানি, সাক্ষী, যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা হলো।


সর্বশেষ সংবাদ