নেশার টাকা জোগাড়ে চাকরির পাশাপাশি ছিনতাই করতেন বুলবুল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ মে ২০২২, ০৭:১৭ PM , আপডেট: ২২ মে ২০২২, ০৭:১৭ PM
বাণিজ্যে স্নাতক শেষ করে একটা চাকরি করছিলেন ওয়াদুদ বুলবুল (৩৬)। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালো কাটছিল তার দিন। মাস চারেক আগে শখ করে বন্ধুর সঙ্গে সেবন করেন ফেনসিডিল। এরপর ইয়াবা। তারপর আর এসব ছাড়তে পারেননি। নেশার জগতে ঢুকে টাকা জোগাড়ে তাকে এখন নামতে হয়েছে ছিনতাইয়ে। গতকাল শনিবার রাতে বুলবুল গ্রেপ্তার হয়েছেন।
পুলিশ বলছে, বুলবুল এখন ভয়ংকর ছিনতাইকারী। তার বাড়ি রাজশাহী নগরীর নওদাপাড়ায়। বুলবুলের বাবা গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ছিলেন। বাবার রেখে যাওয়া চারতলা বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে বাস করেন তিনি। গত শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সাতিল সিরাজের স্ত্রী ইফফাত জাহান রিতার ভ্যানেটি ব্যাগ ছিনতাইয়ের পর শনিবার রাতে বুলবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা-পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারেও পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ইফফাত জাহান রিকশায় চড়ে শহরের রেলগেট থেকে নিউমার্কেটের দিকে যাচ্ছিলেন। তখনই মোটরসাইকেল নিয়ে এসে ইফফাতের ব্যাগ টান দিয়ে নিয়ে যান বুলবুল। পরে ক্লোজ সার্কিটের (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। শনিবার রাতে লক্ষ্মীপুর মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়। গ্রেপ্তারের সময়ই বুলবুল ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেন। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া ব্যাগ ও টাকা। তবে ইফফাতের মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়নি।
ওয়াদুদ বুলবুল জানান, তিনি একটি ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভ। চার মাস ধরে ফেনসিডিল ও ইয়াবায় আসক্ত। হাতে টাকা থাকলে তিনি ফেনসিডিল সেবন করেন। এক বোতল ফেনসিডিলের দাম দুই হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রতিদিন তার অন্তত ছয়টি ইয়াবা বড়ি লাগে। প্রতিটির দাম ২৫০ টাকা। নেশার টাকা জোগাড় করতেই তাকে ছিনতাই করতে হচ্ছে।
বুলবুল আরও জানান, এর আগেও তিনি এভাবে ছিনতাই করেছেন। ছিনতাই হওয়া মোবাইল ব্যবহার করলে কিংবা বিক্রি করলেও তাঁর ধরা পড়ার ভয় আছে। তাই ছিনতাই করা মোবাইল তিনি ড্রেনে ফেলে দেন। ইফফাত জাহানের মোবাইলটিও ফেলেছেন ড্রেনে।
ইফফাত জাহানের ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার সময় সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তাকে পাঞ্জাবি পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে। বুলবুল জানান, জুমার নামাজ আদায়ের পর নেশার জন্য মাথা ব্যথা করছিল। তখনই তিনি একটা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে বের হন। তবে ধরা পড়বেন তা ভাবেননি। এর আগেও ছিনতাই করলেও এবারই প্রথম তিনি ধরা পড়েছেন।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘নেশার টাকার জন্য অনেক ভালো পরিবারের সন্তানেরাও অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। বুলবুলও তাদেরই একজন। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুলবুল যেসব স্থান থেকে মাদক জোগাড় করতেন সেগুলোরও সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে অভিযান চালানো হবে।’