চেয়ারম্যানের স্ত্রীর সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে রিফাত খুন!

  © ফাইল ফটো

বরগুনায় রিফাত শরীফ প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা মামলায় নতুন তথ্য দিয়েছেন তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। এছাড়া এ মামলার তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন তিনি। বুধবার বরগুনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ হত্যাকাণ্ডের নতুন তথ্য প্রকাশ করেন মোজাম্মেল হোসেন।

রিফাত শরীফ হত্যায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর কথা উল্লেখ করে লিখিতভাবে মোজাম্মেল হোসেন কিশোর দাবি করেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রীর সঙ্গে নিহত রিফাত শরীফের বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে রিফাত ও রিশান ফরাজী তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

তার দাবি, বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের স্ত্রী সামসুন্নাহার খুকি সম্পর্কে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী খালা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের আগে রিফাতের সঙ্গে সামসুন্নাহার খুকির বাকবিতণ্ডা হয়। মনক্ষুণ্ন হয়ে বিষয়টি নিয়ে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর কাছে নালিশ করেন তিনি।

মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘রিফাত ও রিশান খুকিকে মায়ের মতোই শ্রদ্ধা করতেন এবং মা বলেও ডাকেন। আমার ধারণা বাকবিতণ্ডার প্রতিশোধ নিতেই রিফাত ও রিশান ফরাজী রিফাত শরীফকে হত্যার পরিকল্পনা করে ও হত্যাকাণ্ডের অগ্রভাগে থাকে।’

এর প্রমাণ হিসেবে তিনি বলেন, যেদিন হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয়, সেদিন রিফাত ও রিশান ফরাজী বলেছিল, ‘তুই আমার মাকে গালাগাল করেছিস। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বল।’ খুকির সঙ্গে রিফাত শরীফের বাকবিতণ্ডার বিষয়টি আমাকে রিফাত শরীফ ও মিন্নি জানিয়েছিল।

এছাড়া মিন্নির বাবা অভিযোগ করেন, মিন্নিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে জোরজবরদস্তি করে পুলিশ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়েছে। প্রভাবশালী মহলকে বাঁচাতে পুলিশ মিন্নিকে ফাঁসাচ্ছে অভিযোগ করে এ মামলার তদন্ত পিবিআইতে হস্তান্তরের আবেদন জানান তিনি। 

তিনি বলেন, সুনাম দেবনাথই নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নাড়ছেন। তিনি প্রকৃত আসামিদের বাঁচাতে মিন্নিকে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মিন্নির মা জিনাত জাহান মনি, ছোট বোন ছামিরা মেঘলা ও ছোট ভাই আবদুল মুহিত ক্বাফি উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। পরে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জখম থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রিফাতের মৃত্যু হয়।

এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এছাড়া এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ মামলার এক নম্বর সাক্ষীকে (মিন্নি) আসামি করা ও রিমান্ডে নেয়ার দ্বিতীয় দিন শেষ হলে আদালতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে সাক্ষী দেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।


সর্বশেষ সংবাদ