অনিয়ম-বাণিজ্যের অভিযোগে কারারক্ষী নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি
- ঝালকাঠি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ০৭:২৮ AM , আপডেট: ২১ জুন ২০২৫, ০২:১১ PM
ঝালকাঠিতে কারারক্ষী নিয়োগের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে এ পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। মঙ্গলবার (৫ মে) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর এ বিষয়ে অভিযোগও করেছেন তারা।
জানা যায় বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় কারারক্ষী পদে স্বাস্থ্য পরীক্ষার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ঝালকাঠি জেলা কারাগার প্রাঙ্গণ। কিন্তু পরীক্ষায় অনিয়মের বিষয়টি টের পেয়ে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে গতকাল দুপুরে বিক্ষোভ করেন পরীক্ষার্থীরা।
অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে ঝালকাঠি জেল সুপার মো. আব্দুল্লাহ ইবনে তোফাজ্জল হোসেন খান বলছেন, এ পরীক্ষার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। ঝালকাঠি জেলাকে ভেনু হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র। পরীক্ষা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদের দু’জন, পিএসসি, কারা অধিদপ্তর, একজন জেল সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ মোট ১৫/২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল ছিল। এক দিনের জন্য এ সিলেকশন পরীক্ষায় যারা নির্বাচিত হবেন, তাদেরই লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা।
ঝালকাঠি জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শারীরিক পরীক্ষায় বাদ পড়া পরীক্ষার্থীরা মূল ফটকের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভাগের ছয় জেলা বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ঝালকাঠি থেকে কারারক্ষী পদে মোট ৬০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে। ছয় জেলার প্রায় ২ হাজার প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে ঝালকাঠিতে আসেন। সকাল ১০টা থেকে তারা জেলা কারাগারের প্রধান ফটকের বাইরে লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু ফটক থেকে অনেককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। এমনকি তাদের শিক্ষা সনদ ছিঁড়ে ফেলা ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকা থেকে আগত প্রতিনিধি দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কারারক্ষীরা প্রধান ফটকের সামনে এসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটান। খবর শুনে সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তাদেরও বাধা দেওয়া হয়। কথা বা দেখা করতে দেওয়া হয়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে। ফলে জানা যায়নি এ পরীক্ষায় মোট আবেদনকারীর সংখ্যা কত। কতজন চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর ডাকযোগে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। অভিযোগের অনুলিপি ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুর রহমমানের কাছেও হাতে হাতে জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলা থেকে আগত চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। উচ্চতা, বুকের মাপ ও অন্যান্য শারীরিক যোগ্যতা পূরণ করলেও তাঁদের ‘অযোগ্য’ বলে সাইড করে রাখা হয়। ঝালকাঠির প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে অন্য জেলার প্রার্থীদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, প্রতিবাদ জানালে কর্তৃপক্ষ সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলে, গায়ে হাত তোলে এবং শারীরিকভাবে হয়রানি করে। চাকরিপ্রার্থীরা এই অনিয়ম তদন্তের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।