কৃষি গুচ্ছ ভর্তির প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়িয়ে অভিনব প্রতারণা

প্রশ্নপত্র ফাঁসের ছড়িয়ে পড়া ছবি
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ছড়িয়ে পড়া ছবি  © টিডিসি ফটো

সম্প্রতি কৃষি গুচ্ছ ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সামনে রয়েছে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। এছাড়াও চলমান রয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।

পরীক্ষাগুলোকে সামনে রেখে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক প্রতারকচক্র। তারা ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে মাহমুদ শাহিন নামের একজন লেখেন, “সুখবর। ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পরীক্ষায় ১০০% হুবহু কমন আসবে। সমাধানসহ প্রশ্ন দেওয়া হবে। যাদের প্রশ্ন লাগবে তারা দ্রুত টেলিগ্রামে ম্যাসেজ দিন।”

এছাড়া ‘বিডি এডুকেশন টিপস’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়, “রাজশাহী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সব ইউনিটের অরিজিনাল বোর্ড কপি প্রশ্ন ও উত্তরপত্র যাদের দরকার, তারা দ্রুত ইনবক্স করুন। আমার দেওয়া প্রশ্ন ১০০% হুবহু কমন থাকবে। শতভাগ নিশ্চয়তার সঙ্গে প্রশ্ন দেবো। বিগত কাজের প্রমাণ পেইজে দেওয়া আছে, সবাই দেখে নিতে পারেন। যারা বিশ্বাস করবেন না, তারা অনুগ্রহ করে টাইমলাইনের কাজের প্রমাণগুলো দেখে আসুন। নো কমেন্ট, ডিরেক্ট ইনবক্স।”

তবে প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ যাচাই করতে গিয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এসব অ্যাকাউন্টের পোস্টের এডিট হিস্টোরি বিশ্লেষণ করলে দেখে, প্রথমে শুধু একটি ডট (.) এবং সাধারণ একটি প্রশ্নপত্র আপলোড করা হয়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে পোস্টটি সম্পাদনা করে তাতে পরীক্ষার আসল প্রশ্নপত্রের ছবি জুড়ে দেওয়া হয়।

এভাবে শিক্ষার্থীদের বোকা বানিয়ে, প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে প্রতারকচক্রগুলো। আর শিক্ষার্থীরাও প্রতারণার ফাঁদে পড়ে হারান লাখ লাখ টাকা।

অথচ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে—এমন কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানাতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) রেজিস্ট্রার ও কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব কৃষিবিদ মো. হেলাল উদ্দীন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি দেখি (প্রশ্নপত্র ফাঁস) নাই। এ ধরনের বিষয় নিয়ে আমি অবগত না। কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটে নাই। আমরা সন্তোষজনকভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শোকরিয়া।’

উল্লেখ্য, পাবলিক পরীক্ষাগুলো (অপরাধ) আইন, ১৯৮০ অনুযায়ী প্রশ্ন সংক্রান্ত কোনো কাগজ অথবা পরীক্ষার জন্য প্রণীত হয়েছে মর্মে মিথ্যা ধারণাদায়ক কোনো প্রশ্ন সংবলিত কোনো কাগজ যেকোনো উপায়ে ফাঁস, প্রকাশ বা বিতরণ শাস্তিমূলক অপরাধ। এমন অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১০ বছর এবং সর্বনিম্ন তিন বছর কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি যদি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতারণা করেন তাহলে তিনি অনধিক পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।


সর্বশেষ সংবাদ