জাবির যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারে গড়িমসি, শাস্তি দাবি ছাত্র ইউনিয়নের
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:২৪ PM , আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:৩০ PM
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নিপীড়ন ও নৈতিক স্খলনে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও শাস্তি কার্যকরে প্রশাসনের টালবাহানায় দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ।
সোমবার (৬ নভেম্বর) ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের বার্তা প্রেরক তানজিম আহমেদ এর পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাথমিক সত্যতা যাচাইয়ে গঠিত কমিটি নানা টালবাহানার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তবে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠিত হলে অভিযুক্তকে অব্যাহতি দেয়ার নিয়ম থাকলেও শিক্ষক জনির ক্ষেত্রে দুইমাসের অধিক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও তার প্রয়োগ দেখা যায়নি। বরং শিক্ষক জনি অদৃশ্য ক্ষমতাবলে এখনও নিজ বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা নিচ্ছেন, যা শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের জন্য অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করছে।
সেখানে আরও বলা হয়, সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম সুকৌশলে জনির শাস্তির বিষয়টি এড়িয়ে যান। এছাড়াও কিছুদিন আগে ফাঁস হওয়া শিক্ষক জনির অডিও ক্লিপে উঠে আসে তার অনুগ্রহে চেয়ারে বসেছেন বর্তমান উপাচার্য। সে বিষয়েরও হয়নি কোনো সুরাহা।
শিক্ষক জনিকে শাস্তি থেকে বাচাঁতে মরিয়া প্রশাসনের এহেন কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিব জামান এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়ে ফাঁস হওয়া অডিওর ব্যাপারে কোন বক্তব্য বা প্রতিবাদ না করার মধ্য দিয়ে প্রশাসনের দেউলিয়াপনা স্পষ্ট হয়েছে। এছাড়াও ভুক্তভোগীকে দিয়ে জোরপূর্বক দায়মুক্তিপত্র লিখে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল- হাসানসহ একজন সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর এবং সহকারী প্রক্টরের আচরণ যদি এমন হয় তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কার কাছে নিরাপত্তা পাবে?
ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ মনে করেন, বিশেষ কোনো ভয়ে বর্তমান উপাচার্য অভিযুক্ত শিক্ষককে শাস্তি প্রদানে গড়িমসি করে যাচ্ছেন। অথচ একজন নিপীড়ক শিক্ষকের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি যেভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে তাতে অবিলম্বেই সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে সেই কালিমা ঘুচানো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া তারা অবিলম্বে নিয়মবহির্ভূত ভাবে কর্মে বহাল থাকা অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনিকে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবী জানায় এবং প্রশাসনের নিপীড়ক তোষণনীতির বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি ঘোষণা করছে।
উল্লেখ্য, উক্ত বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে প্রলোভন দেখিয়ে মাহমুদুর রহমান জনি ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, ভ্রুণ হত্যা এবং পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদানের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে একাধিক জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়েছে।