অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন বগুড়ার আইএইচটির সজল

পুলিশের হাতে গ্রেফতার সজল ঘোষ
পুলিশের হাতে গ্রেফতার সজল ঘোষ  © সংগৃহীত

বগুড়ার ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) চাঁদাবাজি, শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলার একমাত্র আসামি ছাত্রলীগ নেতা সজল কুমার ঘোষ অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছেন। 

মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে নেয়া হয়েছে। এর আগে এদিন সকালে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ছনকা বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

কলেজের অনিয়ম-দুর্নীতি ও বহিরাগত সজল ঘোষের চাঁদাবাজি, নির্যাতন বন্ধে গত ২৯ আগস্ট থেকে লাগাতার বিক্ষোভ করে আসছিলেন আইএইচটির শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে গত রোববার দিনব্যাপী আইএইচটির শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের একপর্যায়ে রাত ১০টার দিকে জেলা পুলিশ সজলকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। এর ধারাবাহিকতায় মামলার ১০ দিন পেরোনোর পর আজ সকালে গ্রেপ্তার হন সজল কুমার ঘোষ।

গ্রেপ্তার সজল কুমার ঘোষ মৃত সুমেন কুমার ঘোষের ছেলে। তিনি পাবনার বাসিন্দা। তবে তার বর্তমান আবাসস্থল বগুড়া শহরের রহমাননগরে। বগুড়ায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তিনি। 

সজলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, সজল ঘোষ শেরপুরের ছনকা বাজারের একটি ঘরে আত্মগোপন করেছিলেন। এই কয়দিন তিনি কোথাও বেশিক্ষণ অবস্থান করেননি। ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করতেন। পরে আজ মঙ্গলবার সকালে তাকে ধরতে সক্ষম হয় পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আইএইচটির শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির হোস্টেলের মিল ম্যানেজার ও শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলামকে মারধর করেন সজল ঘোষ। এই মারধরকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় দু ঘণ্টা সড়ক অবরোধ রাখার পর তারা কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। তখন থেকেই ক্লাস বর্জন করে তারা কলেজের ভেতরে বিক্ষোভ চালিয়ে যান। পরের দিন তিন দফা উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা।

পরবর্তীতে ২ সেপ্টেম্বর কলেজের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান বাদি হয়ে সজলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হোস্টেলের মিলের অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেন। 

শিক্ষার্থীরা জানান, সজল ঘোষ আইএইচটির কোনো শিক্ষার্থী নয়। কিন্তু রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর আইএইচটিতে আসন গেড়ে বসেন। বাগিয়ে নিয়েছিলেন হোস্টেলের ২১৮ নম্বর রুম। হোস্টেলে একমাত্র তার রুম ছিল টাইলস করা। তিনি প্রতিদিন কলেজের গেটের দক্ষিণ পাশে তেঁতুল তলায় বসতেন। কলেজে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের আগে তার সঙ্গে কথা বলতে হতো। না করলেই মারধর করতেন সজল। এ রুমেই সকল শিক্ষার্থীরা তার সেবাযত্ন করতেন। মদের আসর বসানো হতো সেখানে। এ ছাড়া পরীক্ষা, হোস্টেলে ভর্তিসহ নানা অজুহাতে কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে বিভিন্ন সময়ে টাকা আদায় করতেন। টাকা দিতে গড়িমসি করলেই চলতো নির্যাতন, পরীক্ষায় ফেল করে দেয়ার হুমকি।


সর্বশেষ সংবাদ