মাদ্রাসাছাত্রের শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরি, গুগলের তথ্যে ধরা

  © প্রতীকী ছবি

দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের ব্যবহার করে পর্ন ভিডিও তৈরি করে আসছিলেন বরগুনা সদরের ৯ নম্বর বালিয়াতলী ইউনিয়নের দক্ষিণপাতা গ্রামের মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র বায়েজীদ হোসাইন। ছবি ও ভিডিওগুলো তিনি সংরক্ষণ করতেন গুগলের ড্রাইভে। আর প্রচার করতেন সামাজিক মাধ্যমে।

গুগল ড্রাইভে বায়েজীদের সংরক্ষণ করা এসব কনটেন্ট শিশু সুরক্ষায় কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামাজিক সংগঠন ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেন বা এনসিএমইসিকে জানিয়ে দেয়। পরে এই সংস্থাটি তা জানায় বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থাকে (সিআইডি)। এরপর বায়েজীদকে গ্রেপ্তার করলে জানাজানি হয় তার অপকর্ম।

সিআইডির সাইবার ক্রাইম বিভাগের পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, যৌন নির্যাতন, শিশু পর্নোগ্রাফি বন্ধসহ শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে এনসিএমইসি। ফেসবুক, টুইটার, টিকটক গুগল, মাইক্রোসফটসহ প্রযুক্তি ও সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহারকারীরা যদি শিশুদের যৌনকাজে ব্যবহার, যৌন নিপীড়নের তথ্য সংগ্রহ ও সরবরাহ করে থাকে, তাহলে তারা এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য এনসিএমইসিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়।

রেজাউল মাসুদ আরও বলেন, গত ১৯ জুলাই রাতে সিআইডির কাছে একটি গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করে এনসিএমইসি। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত করে বায়েজীদকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তার মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। সেই ফোনে শিশুদের ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফিক কনটেন্ট তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

বায়েজীদ ২০১৫ সালে স্থানীয় সোনাতলা দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল, ২০১৮ সালে খাকবুনিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম পাসের পর বরগুনা আলিয়া মাদ্রাসায় ফাজিল প্রথম বর্ষে পড়ছেন। বাবা রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লে সংসারের হালও ধরেছেন। বাড়িতে থেকে কৃষিকাজও দেখাশোনা করেন।

তার বাবা আবদুল হক বলেন, আমরা ধার্মিক পরিবার। আমার ছেলে মাদ্রাসায় পড়েছে। আমরা ভেবেছিলাম ফেসবুকে কোনো ছবি বা লেখা দেয়ার জন্য তাকে ধরেছে। কিন্তু এখন যা শুনছি, এটা আসলে খারাপ বিষয়। আমার ছেলে অপরাধ করলে শাস্তি হোক।

সিআইডির বরগুনার সাইবার ক্রাইম বিভাগের সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান বায়েজীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সেই মামলায় এই তরুণ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও দু-তিনজনকে আসামি করা হয়।

গুগলের তথ্যের ভিত্তিতে দেশে চাইল্ড পর্নোগ্রাফির এটিই প্রথম মামলা নয় উল্লেখ করে সিআইডির সাইবার ক্রাইম বিভাগের পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, এই ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে প্রায়ই আসে। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। এখন পর্যন্ত আমরা ১০টিরও বেশি মামলা করেছি।

২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে শিশু অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সিআইডি কাজ শুরু করে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।


সর্বশেষ সংবাদ