মাধ্যমিক

সীমিত আসনে পছন্দের কলেজে ভর্তির প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের

সীমিত আসনে পছন্দের কলেজে ভর্তির প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের
সীমিত আসনে পছন্দের কলেজে ভর্তির প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের  © ফাইল ছবি

এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৮৩ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের অধিকাংশেরই পছন্দ থাকে ঢাকার নির্দিষ্ট কিছু কলেজ। কিন্তু ওই কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা সীমিত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের পছন্দের প্রতিষ্ঠান পাঁচশ'র বেশি নয়। সে হিসেবে ভাল ফল করা শিক্ষার্থীরা যেসকল কলেজ পছন্দ করে থাকে সেসকল কলেজে মোট আসন সংখ্যা এক লাখেরও কম।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় এক হাজার ৩০০টি। এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে ৪ লাখের মতো শিক্ষার্থী।

আরও পড়ুন: একাদশে ভর্তি আবেদন শুরু, শেষ ১৫ জানুয়ারি

এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশ থেকে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দের কলেজ পেতে তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়তে হচ্ছে। আর ভালো কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ নিজেদের পছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে না।

তবে সরকারের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে একাদশ শ্রেণির জন্য যে সংখ্যক আসন আছে তা মোট পাশ করা শিক্ষর্থীদের ভর্তির জন্য যথেষ্ট।

সারাদেশের ৯টি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে মোট ২২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন। পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। গত বছর এ হার ছিল ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। সেই হিসাবে এবার পাসের হার বেড়েছে ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ।

এমন পরিস্থিতিতে শনিবার থেকে কলেজগুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আবেদন ফি নির্ধারণ হয়েছে ১৫০ টাকা। এ প্রক্রিয়া শেষ হবে ১৫ জানুয়ারি। এরপর যাচাই এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষে ১৯ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।

দেশের কলেজগুলোতে মোট আসনের ৯৫ শতাংশ ভর্তিচ্ছু সব শিক্ষার্থীর আবেদনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেধার ভিত্তিতে ভর্তির পর বাকি ৫ শতাংশ আবেদন বরাদ্দ থাকবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য। আগামী ২ মার্চ থেকে শুরু হবে একাদশ শ্রেণির ক্লাস।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আসলে ভালো কলেজ বলতে কিছু নেই। আমাদের কাছে সব কলেজই ভালো। তারপরও শিক্ষার্থীদের পছন্দ থাকে কিছু কলেজের প্রতি এটা সত্যি। এই কলেজগুলোতে ভর্তির চাপ ও প্রতিযোগিতা সবসময় থাকবে। তাতে কেউ কেউ বঞ্চিত হবে। এটা পরিস্থিতির কারণে হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, দেশের সব কলেজে ভালো শিক্ষক রয়েছেন। কিন্তু সব কলেজ এতো সুপরিচিত না হওয়ায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা সেগুলোর দিকে বেশি মনোযোগী হয় না। ফলে সেসব কলেজে ভর্তির আবেদনও পড়ে কম।

আরও পড়ুন: প্রথম দিনে ৩ লাখ ৩৭ হাজার আবেদন

ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, অনলাইনে সর্বনিম্ন পাঁচটি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা সমমান প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করা যাবে। একজন শিক্ষার্থী যত কলেজে আবেদন করবে, সেগুলোর মধ্য থেকে মেধা, কোটা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটিমাত্র কলেজে তাকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে।

অধ্যাপক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কলেজে একাদশ শ্রেণিতে আসন সংখ্যা রয়েছে ২৬ লাখ ৯ হাজার ২৪৯টি। আর এবার এসএসসি পাশ করেছে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন। ফলে ৫ লাখেরও বেশি আসন খালি থাকবে। পছন্দের কলেজ না পেলেও সব শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে।

বাংলাদেশ শিক্ষা, তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) হিসাবে, সারাদেশে উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য স্কুল ও কলেজ রয়েছে দুই হাজার ৭৭৮টি। ডিগ্রি, অনার্স ও মাস্টার্স কলেজসহ সব মিলিয়ে সরকারি-বেসরকারি কলেজ রয়েছে চার হাজার ৬৯৯টি। এর বাইরে আড়াই হাজারের বেশি মাদ্রাসা ও দুই হাজারের বেশি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ভর্তির কোনো সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে না পারলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত শিক্ষা-জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হয় কি না জানতে চাইলে ঢাকার শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা বলেন, এরা তো শিশু। এরা কোমল মনের অধিকারী। পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে না পারলে এই শিশুদের মন তো খারাপ হবেই। তবে তারা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই কলেজ পছন্দ করে। ক্লাস শুরু হওয়ার পর আস্তে আস্তে তারা স্বাভাবিক হয়ে যায়। এতে তাদের শিক্ষা-জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে আমার মনে হয় না।

তবে শিক্ষার্থীদের পছন্দের কলেজগুলোকে ভালো কলেজ বলতে রাজি নন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো.আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, ভালো শিক্ষার্থী ভর্তি করার কারণেই তারা ভালো প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরাও এইসব প্রতিষ্ঠান পছন্দ করছে। কিন্তু তারা সাধারণ শিক্ষার্থী ভর্তি করে ভালো রেজাল্ট করে দেখাক তারা ভালো প্রতিষ্ঠান। এই প্রক্রিয়াটা এখনই ভাঙা উচিৎ।

আরও পড়ুন: ভালো ফল করেও পছন্দের কলেজে ভর্তি অধরা থাকবে

তবে শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা বলেন, শিক্ষার্থীরা যে প্রতিষ্ঠানগুলো পছন্দ করে সেগুলো তো অবশ্যই ভালো। কেন ভাল বলছি, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রামের একটা কলেজে যে ল্যাব আছে, তার চেয়ে ঢাকার এই কলেজগুলোর ল্যাব নিঃসন্দেহে উন্নতমানের। শিক্ষার্থীদের অনেক বেশি কাজে লাগে।

তিনি আরও বলেন, গ্রামের কলেজের চেয়ে এই কলেজগুলোর শিক্ষকরাও ভালো, এটা বলতেই হবে। শুধু ভালো শিক্ষার্থী আসলেই হবে না, তাদের সঠিক পরিচর্যা করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। এই কলেজগুলোতে সেটা করা হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা যে বিনা কারণে এই কলেজগুলো পছন্দ করে তা নয়। এর কারণও আছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence