সহপাঠীরা দিচ্ছে পরীক্ষা, বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে নীরব

হাসপাতালে নীরব মজুমদার
হাসপাতালে নীরব মজুমদার  © সংগৃহীত

সহপাঠী বন্ধুরা যখন পরীক্ষার টেবিলে, সে সময়  হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে নীরব মজুমদার। চলমান এসএসসি পরীক্ষার্থী নীরব। ভোলার লালমোহন উপজেলার কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা। ফরম ফিলাপসহ পরীক্ষার সব প্রস্তুতি সম্পন্নও করে। তবে তার সহপাঠীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও নীরবের আর পরীক্ষার টেবিলে বসা হয়নি। কে জান তো পরীক্ষার এ সময় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাতে হবে। ব্রেন স্ট্রোকের কারণে নীরব এখন ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের ৭০১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

নীরবের বাবা রিপন চন্দ্র শীল। ভোলার লালমোহন পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভাড়া বাসায় থাকেন। নিজে লালমোহন বাজারে একটি সেলুনে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। এতে প্রতিদিন যা রোজগার হয় তা দিয়ে সংসার চলে। দুই সন্তানের মধ্যে  বড় নীরব। সন্তানের ভবিষ্যৎ ও উচ্চশিক্ষার আশায় কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করান।

আরও পড়ুন: সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অনন্য ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

রিপন চন্দ্র শীল জানান, রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে নীরবের জ্বর ও মাথাব্যথা দেখা হয়। একই সঙ্গে বমিও শুরু হয়। তাকে ওই সময় লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হলে সাময়িক ভালো হয়। পাঁচ দিন পর বাসায় নিলে আবারও তার একই সমস্যা দেখা দেয়। মাথার যন্ত্রণা ও বমির কারণে স্থানীয়দের পরামর্শে গত ১৯ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মস্তিষ্কে রক্ষক্ষরণ পান এবং একই সঙ্গে টিবি রোগও ধরা পড়ে। 

রিপন চন্দ্র শীলকে ছেলের কাছে থাকার কারণে দোকানের কাজ বন্ধ রাখতে হয়। এতে তার উপার্জনও বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে ছেলের চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে তার সমস্যায় পড়তে হয়। নীরবের চিকিৎসার জন্য তার সহপাঠীরা এগিয়ে আসে। এগিয়ে আসেন বাজারের কিছু ব্যবসায়ীও। তারা যে পরিমাণ সহযোগিতা সংগ্রহ করতে পেরেছেন, তা পাঠিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় মেডিকেলে ভর্তি থাকার কারণে নীরবের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।


সর্বশেষ সংবাদ