সংবাদ সম্মেলনে ৩২ প্রত্যাশীরা
মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ দাবি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ জুন ২০২১, ০৬:৫১ PM , আপডেট: ১২ জুন ২০২১, ০৮:১১ PM
মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করার দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটি বলেন তারা।
বক্তারা বলেছেন, ‘বিসিএস স্বাস্থ্য ও জুডিশিয়ারির ক্ষেত্রে ৩২ বছর পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া হয়। বিভিন্ন কোটার ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা ৩২ বছর দেওয়া হয়। ব্যাকডেট দেওয়ার মাধ্যমে সকল বয়সী শিক্ষার্থী তথা চাকরিপ্রত্যাশীদের ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়। চাকরিতে আবেদনের বয়স স্থায়ীভাবে দুই বছর বাড়িয়ে ৩২ বছর করলে সকলেই তাদের হারিয়ে যাওয়া সময় দুই বছর ফিরে পাবেন।’
করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ততায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে ৩২ বছর করার দাবিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে ন্যূনতম কোনো সাড়া মেলেনি জানিয়ে সাংবাদিকদের শেষ ভরসা হিসেবে উল্লেখ করেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনের নেতারা বলেন, ‘চলমান করোনার ফলে সৃষ্ট অচলাবস্থায় সব বয়সের শিক্ষার্থী চাকরিপ্রত্যাশীরা এরই মধ্যে দেড় বছর হারিয়ে ফেলেছেন। যা দুই বছরের দিকে ধাবমান ও সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ হওয়ায় দেড় লাখ তরুণ-তরুণী (করোনার শুরুর সময়ে যারা ২৮ বছরের অধিক বয়সের ছিলেন) চাকরির পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ না পেয়েই ৩০ বছর পার করতে যাচ্ছেন। যারা ২৬ বছর বয়সে শিক্ষাজীবন শেষ করে সেই করোনা শুরুর সময় থেকে আশায় বসে আছে চাকরির পরীক্ষায় বসবে, তারাও এই দেড় বছর হারাতে চলেছেন।’
আরও পড়ুন: লকডাউন বাড়লে পেছাবে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা
চাকরির বয়স ৩২ বছরের দাবি নিয়ে আন্দোলনকারী নেতারা আরও বলেন, ‘সরকারি বিধি মোতাবেক প্রচলিত যে ৩০ বছর বয়স অবধি আবেদনের সুযোগ পাওয়ার কথা করোনার আঘাত কিন্তু প্রকৃতই সেই সুযোগ দিচ্ছে না। ১৯৯১ সালে শেষবার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২৭ থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ বছর করা হয়, যখন গড় আয়ু ছিলো ৫৭ বছর। এরপর বিগত ৩০ বছরে গড় আয়ু ১৬ বছর বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর হলেও বৃদ্ধি পায়নি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা। ২০১১ সালে এসে অবসরের বয়স বেড়ে হয় ৫৯ আর মহান মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হয় ৬০ বছর। অবসরের বয়স যেহেতু বছর বৃদ্ধি পেয়েছে সেক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি করলে সেটাও আর সাংঘর্ষিক হয় না।’
বক্তারা বলেন, করোনাকালে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরিমাণ ৮৭ শতাংশ কমে ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। বেকারত্বের হার ২০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে ইউজিসির সামনে মানববন্ধন কাল
উল্লেখ্য, ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে কর্মসূচি পালন করতে এলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনের কর্মসূচিতে এ ঘটনা ঘটে। এদিন দুপুর থেকে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। বৃষ্টির মধ্যেও তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যেতে দেখা যায়। আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, আমরা আমাদের কর্মসূচি শেষ করে শাহবাগ থানার সামনে দিয়ে রাজু ভাস্কর্যের দিকে আসছিলাম। এ সময় পুলিশ বিনা উস্কানিতে আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। পরে তারা রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দেন, তৎক্ষণাৎ জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন। পরে তা না করে আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন।
এর আগে আন্দোলনকারী জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালে সংসদ এলাকায় মৌন সমাবেশে অংশ নেন।
শনিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে চাকরিপ্রত্যাশী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তানভির হোসেন, সাজিদ সেতু, আনোয়ার সাকিন, অক্ষয় রায়, শারমিন পরী, আয়েশা আমির, আকাইদ আকন্দসহ অন্যান্যরা।