সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে ইসিতে আবেদন

নির্বাচন কমিশন (ইসি)
নির্বাচন কমিশন (ইসি)  © ফাইল ছবি

প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ১ম ধাপের পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশন (ইসি) বরাবর আবেদন করেছেন পরীক্ষার্থীরা। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে আবেদনপত্রটি জমা দিয়েছেন তারা। ওই আবেদনের একটি কপি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে এসেছে। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিএনপির দশ দফার অবরোধ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত থাকায় দূরদূরান্ত থেকে কেন্দ্রে যেতে তারা কোনো বাস-ট্রেনের টিকিট পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় পরীক্ষায় অংশ নেয়া তাদের জন্য শঙ্কার হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

ইসিতে দেয়া পরীক্ষার্থীদের পক্ষে মো. আশরাফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আবেদনে বলা হয়েছে, আগামী শুক্রবার প্রথম ধাপের এই নিয়োগ পরীক্ষায় রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মোট ৩ লক্ষ ৬০ হাজার পরীক্ষার্থী অংশগ্রহন করবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই নিয়োগ পরীক্ষায় অর্ধেকের বেশি পরীক্ষার্থী বিভিন্ন কারনে নিজ জেলার বাহিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করছে। দেশের এই হরতাল ও অবরোধের কারণে বুধবার ও বৃহস্পতিবারে মধ্যে আমরা নিজ জেলায় যেতে পারছি না। এর সাথে জীবনের ঝুঁকিও রয়েছে। সেই সাথে অনেকের এডমিট কার্ড ডাউনলোডের মেসেজ এখনোও আসে নাই। নির্বাচন তফসিল ঘোষনার পর সকল প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন থাকে। দেশের এই পরিস্থিতিতে যদি ৮ ডিসেম্বর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় তবে আমরা অর্ধেকের বেশি পরীক্ষার্থী অবরোধের কারণে পরীক্ষা দিতে নিজ জেলাতে উপস্থিত হতে পারবো না।

এছাড়া আবেদনে সমস্যার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা -২০২৩ (১ম ধাপ) পরীক্ষা স্থগিত করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা কামনা করেছেন পরীক্ষার্থীরা।

আবেদনকারী পরীক্ষার্থীদের একজন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পরীক্ষার বাকি মাত্র দুই দিনেরও কম সময় থাকলেও একখনও আমি প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারিনি। আমার মতো আরও অনেকেই পারেনি। যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং হরতাল-অবরোধের এমন পরিস্থিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা দিতে যাওয়া আমাদের জন্য শঙ্কার। এমন অবস্থায় নির্বাচন কমিশন আমাদের আবেদন গ্রহণ করলেও এ পরীক্ষার অন্যতম তদারক সংস্থা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আমাদের আবেদন গ্রহণ করেনি। এজন্য আমরা হতাশ। তারা আমাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। আমাদের জীবনের কোনো মূল্য নাই তাদের কাছে। আমাদের কিছু হলে এর দায় কে নিবে? বিসিএসের মাত্র ১২ হাজার প্রার্থীর পরীক্ষা স্থগিত হলে আমাদের সাড়ে তিন লক্ষাধিক প্রার্থীর পরীক্ষা কেনো পেছানো যাবে না? 

আরও পড়ুন: ১০ ব্যাংকের ৯২২ পদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলে আপত্তি প্রার্থীদের

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক পরীক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ঢাকায় থাকলেও পরীক্ষা দিতে হবে লালমনিরহাটে। হরতাল-অবরোধের কারণে কোনো টিকিট পাইনি। এই অবস্থায় আগামী ৮ ডিসেম্বর পরীক্ষা দিতে যাওয়া সম্ভব নয়। আমার সাথে থাকা বান্ধবীদেরও একই সমস্যা। পরীক্ষা স্থগিত না করলে প্রতিক্ষিত এই পরীক্ষায় আমরা অংশ নিতে পারবো না।

এছাড়া ঢাকায় অবস্থানরত বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এখনও কোনো ট্রেন বা বাসের টিকিট তারা পাননি। আবার হরতাল-অবরোধের মধ্যে এই পরীক্ষার জন্য তাদের ঢাকা থেকে পরীক্ষা দিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেতে হবে, যা তাদের নিরাপত্তার জন্য শঙ্কার।

এর আগে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপের পরীক্ষা ২৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে তা দুই ধাপে পিছিয়ে ৮ ডিসেম্বর নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গত ৮ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ২৪ নভেম্বরের পরিবর্তে ১ ডিসেম্বর পরীক্ষা হবে। তবে সেই সিদ্ধান্তও পরিবর্তন করে গত ২১ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আগামী ৮ ডিসেম্বর পরীক্ষা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।


সর্বশেষ সংবাদ