বইমেলায় পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে ইমদাদ হকের ‘সার্বিয়া : শুভ্র শহরের দেশে’

বইমেলায় পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে ইমদাদ হকের ‘সার্বিয়া : শুভ্র শহরের দেশে’
বইমেলায় পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে ইমদাদ হকের ‘সার্বিয়া : শুভ্র শহরের দেশে’  © টিডিসি ফটো

একুশে বইমেলায় পাঠকপ্রিয়তায় তরুণদের বইও এগিয়ে ছিলো অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত  সাংবাদিক ও লেখক ইমদাদ হকের ‘সার্বিয়া : শুভ্র শহরের দেশে’। বাংলা ভ্রমণ সাহিত্যের পাঠককে আন্দোলিত করার মতো তেমনি একটি গ্রন্থ। এটি ইমদাদ হকের এটি দ্বিতীয় বই।

ইমদাদ হকের জন্ম ১৯৮৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর নাটোর জেলার বাগাতিপাড়ায়। পড়ালেখা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় শুরু করেন সাংবাদিকতা।সেই অভিজ্ঞতার আলোকে তার লেখা প্রথম বই ‘ক্যাম্পাস রিপোর্টিং: সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি’।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব হার্ডাসফিল্ডের যৌথ ফেলোশিপ নিয়ে ডিপ্লোমা করেছেন ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে। এখন পড়ছেন ঢাকা স্কুল অব ইকোনোমিক্সে মাস্টার্স ইন অন্ট্রাপ্রেনিওরশিপে। লেখক ও সাংবাদিক ইমদাদ হক এখন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে কর্মরত। 

তার এ ভ্রমণে প্রাকৃতিক-ঐতিহাসিক নানা দৃশ্যপটের সঙ্গে নতুন উপজীব্য হয়ে ওঠে সার্বিয়ান এক তরুণী। ঠিক প্রেম নয়, প্রেমের চেয়ে কম কিছুও নয়। পার্থিব দৃশ্যপটের সঙ্গে উঠে এসেছে রোমান্সের হৃদয় ছোঁয়া-না ছোঁয়ার গল্পও। যার পুরো বর্ণনা এসেছে ‘সার্বিয়া : শুভ্র শহরের দেশে’ ভ্রমণগদ্যে।

প্রচলিত ধারায় বেশিরভাগ ভ্রমণকাহিনী ধারা বিবরণী টাইপের হয়ে থাকে। লেখক কোথা থেকে কোথায় গেলেন, কী দেখলেন, কী খেলেন—এর বর্ণনা দেন। বাড়ির পাশে আরশিনগর ও প্যারিস এয়ারপোর্ট অধ্যায় দিয়ে লেখকের সার্বিয়া ভ্রমণ শুরু (পড়ুন পাঠকেরও)। দুটি অধ্যায়েই পাঠকের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে, শুধু লেখকের এখানে গেলাম, এটা দেখলাম আর ওটা খেলামে বইটি সীমাবদ্ধ নয়।

প্রতিটা অধ্যায়েই লেখক প্রাসঙ্গিক তথ্য, ইতিহাস কিংবা বর্ণিল সংস্কৃতির ঝাঁপি পাঠকের দুচোখের সামনে এনে হাজির করেছেন। বাদ যায়নি সার্বিয়ান দেশ ঐতিহ্যবাহী খাদ্য সংস্কৃতি, ফ্যাশন, দেশটির পরতে পরতে প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকা মার্শাল টিটো ও তার স্ত্রী সাবেক ফার্স্ট লেডি জোভাঙ্কা ব্রোজের পরিচিতি, প্রভাব ও ব্যবহার্য সামগ্রীর প্রদর্শনী, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার হাল, ভৌগলিক পরিচয়, খেলার জগতে দেশটির অবস্থা, বিশেষ করে ফুটবলের তুমুল জনপ্রিয়তা, পার্কসহ দর্শনীয় স্থান, ঐতিহ্য ধরে রাখা রাজ পরিবারের প্রভাব, প্রতিপত্তি ও গুরুত্ব, গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও প্রশাসনিক স্থাপনা, দানিউব ও সাভার তীরের রোমান্টিসিজম।

ইলন মাস্কের বিশ্বব্যাপী সাড়াজাগানো কোম্পানি টেসলা, যার নামানুসারে সেই বিখ্যাত সার্বিয়ান উদ্ভাবক ও বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলাকে নিয়ে রয়েছে স্বতন্ত্র অধ্যায়। এককথায় ১৭৬ পৃষ্টার এই বইয়ে বলতে গেলে বাদ যায়নি কিছুই। 

মেলায় আপনার ভ্রমণ বিষয়ক বই মধ্যে  পাঠকদের সাড়া পাচ্ছেন কেমন বিষয়ে লেখক  ইমদাদ হক বলেন, এবার অন্যপ্রকাশ থেকে এসেছে ‘সার্বিয়া: শুভ্র শহরের দেশে’ ভ্রমণ গদ্যটি। আমি মূলত ভ্রমণ গল্পই লিখছি। শখ থেকেই ঘোরাঘুরি। এরপর পেশাগত কারণেও দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন দেশ ঘোরা হলো। কত দেশেই তো যাওয়ার সুযোগ পেলাম।

তিনি বলেন, একটি দেশের ঐতিহ্য, নান্দনিক সৌন্দর্য, তারুণ্যের পছন্দ— যেগুলো আমি দেখে এলাম, সেগুলো অন্যদেরও জানাতে চাই। জানানোর সহজ উপায়ের একটি হলো লেখালেখি। প্রতিদিন নতুন নতুন লোকজন আসছে, ঘুরে দেখছে। বই কিনছে। তাদের বইয়ের তালিকায় আমার বইটিও রাখছে। অনেকে আমাকে খুঁজে বের করছে।  লেখক আর বইয়ের সঙ্গে পাঠকের অটো আর ফটোগ্রাফের আবদার— এটা তো একজন লেখকের সুখের ঘটনা।


সর্বশেষ সংবাদ