বেশি বেশি বই পড়ি, জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করি

  © ফাইল ছবি

আজ ২৩ এপ্রিল (শুক্রবার) বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস। ইউনেস্কোর উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতিবছর এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর ২৩ এপ্রিল বিশ্ব বই দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বই পড়া, বই ছাপানো, বইয়ের কপিরাইট সংরক্ষণ করা ইত্যাদি বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতেই প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়।

বই মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। যার সাথে পার্থিব কোনো সম্পদের তুলনা হতে পারে না। একদিন হয়তো পার্থিব সব সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাবে, কিন্তু একটি ভালো বই থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান কখনও নিঃশেষ হবে না, তা চিরকাল হৃদয়ে জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখবে। বিল গেটস প্রতিবছর ৫০টি বই শেষ করেন। মার্ক কুবান প্রতিদিন ৩ ঘন্টার বেশি বই পড়েন। ইলন মাস্ক রকেট সায়েন্সের বিদ্যা বই পড়ার মাধ্যমে অর্জন করেছেন।

একটা বই শুধু তথ্য দেয় না , প্রশ্ন দেয় এবং নতুন করে চিন্তা করতে শেখায়। বই কেন পড়ব? বই পড়ার প্রয়োজনীয়তা ঠিক কী? শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে বই আমাদের কতটা সাহায্য করে এসো জেনে নেওয়া যাক —

জ্ঞান বৃদ্ধি করে: বই পড়ার মাধ্যমে আমাদের জ্ঞানের পরিধি ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করে। যত বেশি বই পড়া যাবে, তত বেশি জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে। বইয়ের ভেতরে থাকে অজানা তথ্যের খাজানা। যখন আমরা বই পড়বো তখন বইটির ভিতরে থাকা নানা ধরনের তথ্যের সাথে পরিচিতি লাভ করতে পারব। হোক সেটি ফিকশন কিংবা ননফিকশন, বই-ই পারে একজন মানুুষকে যথার্থ জ্ঞানী বানাতে। আর জ্ঞান সবসময় একজন মানুষকে সমৃদ্ধ করে।

মানসিক উদ্দীপনা তৈরি করে: একটি গবেষণায় দেখা গেছে বই পড়ার অভ্যাস মানুষকে ‘‘Dementia এবং Alzheimer’s” নামে দুটি রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বই পড়ার ফলে মানুষের মস্তিষ্কে যে উদ্দীপনা ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয় তা মানুষের মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। মানুষের শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো মস্তিষ্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শরীর সুস্থ রাখতে আমরা যেমন ব্যায়াম করি তেমনি মস্তিষ্ককে সবল ও কর্মচঞ্চল রাখতে বই পড়া বিশেষ জরুরী।

মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে: ২০০৯ সালে United kingdom এর Sussex ইউনিভার্সিটির বৈজ্ঞানিকরা হার্ট রেট ও মাসেল টেনশন মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখেন যে, কিছু কিছু কাজ আমাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

তারা লক্ষ্য করেন যে মাত্র ছয় মিনিটের জন্য বই পড়লে স্ট্রেস লেভেল ৬৮% পর্যন্ত কমে যায়, যা হাঁটা (৪২%), কফি পান (৫৪%) বা গান শোনার (৬১%) থেকে অনেকটা বেশি কার্যকর। বই পড়ার মধ্যে পুরোপুরি ডুবে যাওয়ার ফলে যে বিষয়গুলি আমাদের অমনোযোগী করে বা স্ট্রেস লেভেল বাড়িয়ে দেয় তা অনেকটাই কমে যায়।

কারণ বই পড়ার মধ্য দিয়ে আমরা এক মূহুর্তে কোনো এক অজানা জগতে পৌঁছাতে পারি। যা আমাদের প্রতিদিনের বাস্তবতা, সমাজ সংসারের নানা দুঃখ কষ্ট থেকে একটু হলেও রেহাই দেয়, ফলে আমাদের মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায়।

অন্যের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ: যিনি বই লেখেন তিনি তাঁর বইয়ের প্রতিটি পাতায় তাঁর দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করেন লেখার মাধ্যমে, তাঁর সেই জ্ঞানের আলোয় আমরা আলোকিত হয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ পেয়ে থাকি।


সর্বশেষ সংবাদ