নির্বাচন-কার্যক্রম ছাড়াই সচল ডাকসুর আয়-ব্যয়

ডাকসু
ডাকসু   © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদগুলোর এখন কোনো অনুমোদিত কমিটি নেই। কবে এইগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়েও নেই কোনো সুসংবাদ। তবুও সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে প্রতিনিয়তই ডাকসুর ফি আদায় করা হচ্ছে, এছাড়া সংগঠনটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদও লাখ লাখ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।

ঢাবির অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ডাকসু কর্তৃক মনোনীত পাঁচজন শিক্ষার্থী-প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের সদস্য হিসেবে নিয়োজিত হয়ে থাকেন। এ ফোরামে নিয়োজিতরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরার সুযোগ পান। সর্বশেষ ডাকসুর ভিপি নুরুল হক, জিএস গোলাম রাব্বানী ও এজিএস সাদ্দাম হোসেনসহ পাঁচজন সিনেটে প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে এই প্রতিনিধিত্বও এখন বন্ধ হওয়ার পথে।

জানা গেছে, দীর্ঘ ২৮ বছর অপেক্ষা শেষে ২০১৯ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে ডাকসু ও ১৮টি হল সংসদ সচল হয়। সেই নির্বাচনে ভিপি পদে নুরুল হক, জিএস পদে গোলাম রাব্বানী ও এজিএস পদে সাদ্দাম হোসেন নির্বাচিত হন। ডাকসুর সেই কমিটি ও হল সংসদের মেয়াদ ২০২০ সালে শেষ হয়।

এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ডাকসু ও হল সংসদের প্রভাবে হলগুলোতে ‘গেস্টরুম নির্যাতনের’ মাত্রা অনেকটা কমেছিল। ডাকসু ও হল সংসদ অচল হয়ে যাওয়ায়, তা এখন অনেকটা বেপরোয়াভাবে বেড়েছে। 

এ ব্যাপারে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব। নির্বাচন না হওয়ায় ডাকসু ও হল সংসদের কার্যক্রম সেভাবে নেই। তবে ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশাকে কেন্দ্র করেই রাজনীতি করে। 

এদিকে ডাকসুর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও ভাতাবাবদ ব্যয় বাড়ছে। গত ১৬ জুন ঢাবির ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। গত অর্থবছরে ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা এই খাতে খরচ হয়েছিল৷ চলতি অর্থবছরে বেতন-ভাতাবাবদ খরচ ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা বাড়ছে। 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালকের দপ্তর জানিয়েছে, ডাকসু ও হল সংসদের ফি বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি ১২০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।

এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ডাকসুর কার্যালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। তারা জানাচ্ছেন এখন তেমন কোনো কাজ নেই। তারা ডাকসু ভবনের কক্ষগুলো পরিষ্কার এবং সংগ্রহশালা ও কার্যালয় খোলা রাখছেন।

তবে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক এই খাতে ব্যয়কে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের অপচয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, অচল ডাকসুর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন–ভাতায় এভাবে অর্থ খরচ করা সংগতিপূর্ণ কাজ নয়।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ডাকসুর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আগে থেকেই নিয়োগপ্রাপ্ত। তাই তাদের বেতন-ভাতা দিতেই হয়।


সর্বশেষ সংবাদ