সাংবাদিককে হুমকি বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ কর্মীর, বিচারের দাবি চবিসাসের
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:১৭ PM , আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:১৭ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাংবাদিক সমিতির সদস্য ইফতেখায়রুল ইসলামকে হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের ঘটনায় বিচারের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)।
বুধবার (৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের মাধ্যম উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার বরাবর দেওয়া এক অভিযোগপত্রে এ দাবি জানানো হয়।
চবি সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস) সভাপতি ইমরান হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মুনাওয়ার রিয়াজ মুন্নার পক্ষে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অভিযোগপত্রে বলা হয়, চবিসাস সদস্য সময় নিউজের প্রতিনিধি ইফতেখায়রুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী (আইডি: ২০১০৭১৩৪)। মোবাইল ফোনে প্রক্টর পরিচয়ে গালিগালাজ ও দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলায় জড়িত থাকার দায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত তিন কর্মীকে ক্যাম্পাসে অবস্থান না করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে, হল ও ক্যাম্পাসে অবস্থান করার পাশাপাশি তারা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা হলেন আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. নাঈম, একই শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের সাইফুল ইসলাম এবং আরবি বিভাগের তৌহিদ ইসলাম।
৬ মাসের জন্য বহিষ্কৃত হলেও পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়ে খোঁজ নিতে সোমবার আরবি বিভাগের সভাপতি মুহাম্মাদ শাযআত উল্লাহ ফারুকীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইফতেখায়রুল ইসলাম।
তথ্য চাওয়াকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ইফতেখায়রুল ইসলামকে প্রক্টর পরিচয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন একজন।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে একটি ফোন কলের মাধ্যমে অপর প্রান্ত থেকে এই হুমকি দেয়া হয়। পরে আরেক ফোন কলে সে আরবি বিভাগের (১৯-২০) শিক্ষাবর্ষের তৌহিদ ইসলাম বলে নিজেকে পরিচয় দেয়৷
ফোন কলে ওই বলেন, আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া, প্রক্টর বলছি। আপনি কি নারায়ণগঞ্জের কেরানিগঞ্জের মোল্লাপাড়া মার্কেটে আছেন না? গতকাল আরবি বিভাগে সভাপতি আমাকে ফোন দিয়েছে আমি উনার থেকে আপনার নাস্বার নিয়েছি৷ আপনি জানতে চেয়েছে আরবি বিভাগের ওই ছেলে (তৌহিদ) পরীক্ষা দিয়েছে কি না।
এসময় প্রক্টর পরিচয় দেওয়া ওই ব্যাক্তির পরিচয় জিজ্ঞেস করলে, তিনে জোর গলায় দাবি করেন 'আমি প্রক্টর'।
পরে সে আরবি বিভাগের সভাপতিকে কেন ফোন দেওয়া হয়েছে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রতিবেদককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, দেখে নেওয়া এবং খুঁজে বের করার হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হুমকির শিকার ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, আমি গতকাল আরবি বিভাগের সভাপতিকে ফোন দিয়েছিলাম তৌহিদ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে কি না এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে। পরে আজ সকালে আমার ফোনে বেশ কয়েকটি কল আসে। এসময় একজন চবি প্রক্টর পরিচয়ে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
এদিকে বেলা দুইটায় প্রক্টর পরিচয়ে হুমকি দেওয়া ওই নাম্বর থেকে আরেক ফোন কলে হুমকিদাতা নিজেকে আরবি বিভাগের তৌহিদ বলে পরিচয় দেয়৷ এসময়ও সে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বহিষ্কার হওয়ার পরও ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে বলে স্বীকার করে।
চবিসাসের এ সদস্য এমন পরিস্থিতিতে আমি জীবন শঙ্কায় রয়েছে বলে জানান, আমাকে তো বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে, ক্লাস করতে হবে। আমি চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিচার হোক।
এ বিষয়ে চবি প্রক্টর রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, আমি অভিযোগপত্র পেয়েছি। একজন শিক্ষার্থী প্রক্টর পরিচয়ে কাউকে হুমকি দেবে, তা মেনে নেয়ার মতো নয়। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই শিক্ষার্থীকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।