পূজামণ্ডপে হামলা-ভাংচুরে জড়িতদের শাস্তি দাবি ঢাবি নীলদলের

লোগো
লোগো  © ফাইল ফটো

দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলদল। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

শনিবার (১৬ অক্টোবর) সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস ছামাদ ও যুগ্ম আহবায়ক ড. মো. আবদুর রহিমের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে তারা বলেন, কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমানার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক চক্র বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত করে ঘোলা জলে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ, চট্টগ্রামের বাঁশখালী ইউনিয়নের পশ্চিম চাম্বল জেলেপাড়া, চট্টগ্রাম নগরের ঐতিহাসিক জেএমসেন হল, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি স্থানে পূজামণ্ডপে হামলা, প্রতিমা ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

গণমাধ্যমের বিভিন্ন খবর বিশ্লেষণ করে এ কথা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়, আন্দোলন-সংগ্রামের নামে বিভিন্ন সময়ে হরতাল-ধর্মঘট ও অগ্নিসন্ত্রাস করে রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে একটি দল এবং তাদের দোসর সাম্প্রদায়িক প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী সুপরিকল্পিতভাবে প্রথমে পূজামণ্ডপে ইসলামের পবিত্র মহাগ্রন্থ আল কোরআন শরীফ রেখে আসে এবং সেই খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার অপচেষ্টা চালায়। রাজনীতির মাঠে চরমভাবে ব্যর্থ এ রাজনৈতিক দল এবং তাদের সহযোগী ধর্মান্ধ গোষ্ঠী নামে-বেনামে ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচারের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে পূর্ব পরিকল্পিত উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

এছাড়া ঢাকা, দিনাজপুর এবং কুষ্টিয়ায় জুমার নামাজের পর প্রতিবাদ মিছিলের নামে উত্তেজনা ছড়ানোর প্রচেষ্টা করা হয়। এই চিহ্নিত গোষ্ঠী ২০১২ সালে রামুতে বৌদ্ধ তরুণের ফেসবুক একাউন্ট থেকে ইসলাম ধর্ম, ইসলামের ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন এবং মহানবীকে (স.)-কে অবমাননা, ২০১৩ সালে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে চাঁদে দেখতে পাওয়া এবং এ বছর মার্চে সুনামগঞ্জের সাল্লায় হিন্দু যুবক কর্তৃক ফেসবুকে মাওলানা মামুনুল হককে অবমাননা করা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক হামলা, ভাংচুর ও সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছিল। এই চিহ্নিত চক্রটি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দিশেহারা হয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ দেশের মানুষ ধর্ম-বর্ণ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে পাশাপাশি বসবাস করে আসছে। কাজেই এ দেশের মানুষকে অতীতে যেমন ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করা যায়নি, আগামীতেও যাবে না।

আমরা এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সাথে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জন্য সরকারে কাছে জোর দাবি করছি। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং প্রয়োজন হলে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর বিরুদ্ধে নতুন আইন প্রণয়নের আহŸান জানাচ্ছি।


সর্বশেষ সংবাদ