ঢাবিতে বাংলা নববর্ষের শোভাযাত্রার নাম কি পরিবর্তন হচ্ছে?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৫ AM , আপডেট: ৩০ নভেম্বর -০০০১, ১২:০০ AM

বাংলা নববর্ষ বরণ করে নিতে প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে শোভাযাত্রা করা হয়। যদিও এ নাম নিয়ে এবার যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছে। দাবি উঠেছে নাম পরিবর্তন করার। আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলন করে নামের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে কর্তৃপক্ষ। এবার নববর্ষের প্রতিপাদ্য হলো ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ পহেলা বৈশাখে উৎসব মুখর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করে থাকে। এটি দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এবং গুরুত্বাবাহী বলে বিবেচিত হয়। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও চারুকলা অনুষদ পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আয়োজনের কাজ চলছে।
অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছরের শোভাযাত্রাটি হবে সর্ববৃহৎ, বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ। শোভাযাত্রায় বৈচিত্র্য ও বিভিন্ন জাতিসত্তার অংশগ্রহণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিবৃতি প্রদানের লক্ষ্যে আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় চারুকলা অনুষদ লাইব্রেরি ভবনের নিচতলায় ওসমান জামাল মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তুলি হাতে নিয়ে হরেক রংয়ে ফুটিয়ে তুলছেন বিভিন্ন ধরনের মাসকট, সরাচিত্র, মুখোশ আর মোটিফ। অন্তত ২০ দিন ধরে এখানে বাংলা নববর্ষ বরণের প্রস্তুতি চলছে। এর পেছনে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কারিগররা কাজ করছেন। তারা পাশেই তাদের শিল্পকর্ম বিক্রির জন্য রেখেছেন। মূলত এসব বিক্রি করেই শোভাযাত্রার বড় অংশের খরচ মেটানো হয়।
নতুন বাংলাদেশে এক নতুন চৈত্র নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রঙ্গনে। বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ বরণ করে নিতে এবারের আকর্ষণ দীর্ঘদেহী এক রাক্ষস। যার মাথায় রয়েছে দুটি শিং এবং মুখের দুপাশে দুটি দীর্ঘ দাঁত। এছাড়া এবারের শোভাযাত্রায় স্থান পাবে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি একটি পায়রা, গ্রামীণ ঐতিহ্য লালনকারী এক সময় বিয়েতে ব্যবহৃত পালকি, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, ইলিশসহ অনেক কিছু।
জুলাই অভ্যুত্থানের মুগ্ধের পানি পানি বলে চিৎকার করার বিষয়টিকে ফুটিয়ে তুলতে থাকবে বৃহদাকারের পানির বোতল। বিগত বছরগুলোর মতোই এবারও শোভাযাত্রায় স্থান পাবে বাঘ ও রাজা-রানির মুখোশ। বর্ণিল সাঝে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে সরাচিত্রসহ বিভিন্ন মাসকট। এছাড়া এবারে শোভাযাত্রায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে চিত্রকলার ঐতিহ্যের গৌরব ‘পটশিল্প’। ১০ ফুট দৈর্ঘের মোট পাঁছটি পটচিত্র অঙ্কন করা হবে বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন: নববর্ষ বরণে চারুকলায় চলছে কর্মযজ্ঞ, আলোচনায় শিং ওয়ালা ‘রাক্ষুসে স্বৈরাচার’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ শোভাযাত্রা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুদিনের ঐতিহ্যের পরিচায়ক। এ ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা অব্যাহত রেখে অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য আরও বড় পরিসরে, বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে, লোক-ঐতিহ্য ও ২৪-এর চেতনাকে ধারণ করে। এ বছর শোভাযাত্রায় সর্বজনীন অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হবে।
অন্য বছরপুরো এ আয়োজনের দায়িত্ব নির্দিষ্ট একটি ব্যাচের কাছে থাকতো। তবে এবার আর তা হচ্ছে না। চলতি সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরাই এবার সরাসরি এ কাজের সঙ্গে জড়িত। শিক্ষার্থীরা বলেন, একটি নির্দিষ্ট ব্যাচের দায়িত্বে থাকলে সকল শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দেখায় না। সবাই আসতেও চান না একাজ করতে। তাই এবার সব ব্যাচের ছাত্র-শিক্ষক মিলে একসঙ্গে কাজটা করছে।
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর মতো এবারের শোভাযাত্রায় পেঁচার অবয়ব থাকছে না। এছাড়া আবু সাঈদের পারিবারিক বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তার বিষয়টিও রাখা হচ্ছে না। প্রস্তুতির কাজ চলছে এবং আমরা একটা সংবাদ সম্মেলনে এর হালনাগাদ তুলে ধরব। এবারের শোভাযাত্রার নাম সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা হবে।’