সাত কলেজ নিয়ে কমিটি গঠন করল ঢাবি

সাত কলেজ
সাত কলেজ  © লোগো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস থেকে সরকারি সাত কলেজের কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সুপারিশ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এবং অধিভুক্ত কলেজের একজন অধ্যক্ষের নেতৃত্বে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এতে ঢাবি প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধি থাকবে। দ্রুত ঢাবির সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি চূড়ান্ত করতে সম্প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এই নির্দেশ বাস্তবায়নে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা করেছে প্রশাসন। বৈঠকে উপস্থিত এক সদস্য আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইউজিসি সুপারিশগুলো পর্যালোচনার জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সেই কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান। এই কমিটি চলতি সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন বলেও তিনি জানান। তিনি আরও জানান, এই কমিটির একটি বৈঠক আগামীকাল বুধবার (১২ মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে।

অধিভুক্ত সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাবির প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ সম্প্রতি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সাত কলেজের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত হলো অধিভুক্তি থাকছে না। তবে এটা বাস্তবায়নে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে, সরকারের সাথে আলোচনাও করছে। 

এদিকে, ইউজিসির পাঠানো সুপারিশে বলা হয়, স্বতন্ত্র কাঠামোর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘নজরদারি সংস্থা’। সংস্থার দায়িত্বে থাকবেন ইউজিসির একজন সদস্য। সাত কলেজের একজন অধ্যক্ষ সংস্থাটির পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাবির রেজিস্ট্রার দপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা, পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা, অর্থ ও হিসাব সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট শাখার মনোনীত প্রতিনিধি  দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সাত কলেজের অনলাইন ভর্তি কমিটির মাধ্যমে আবেদন সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এসব কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে এই কাঠামো বলে জানিয়েছে সরকার।

সুপারিশে আরও বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রশাসনিক জটিলতা ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নানা অসুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীলতার সঙ্গে বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখবে। সাত কলেজ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অধিভুক্ত সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন হতে নিম্নবর্ণিত সুপারিশ করা হলো।’

সুপারিশ অনুযায়ী, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, ভর্তি সংক্রান্ত দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর ও হিসাব বিভাগের প্রতিনিধি সমন্বয়ে সাময়িক একটি সমন্বিত কাঠামো থাকবে যা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ হতে সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর পর্যায়ের যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।’

এতে বলা হয়, ‘একটি সনদপ্রাপ্ত পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়/ সমকক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতাভুক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই সাময়িক কাঠামো সাতটি কলেজের দায়িত্ব পালন করবে; কাঠামোর কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরের কোন উপযুক্ত কার্যালয় (যে কলেজ থেকে পরিচালক মনোনীত হবেন) থেকে পরিচালিত হবে; এই কাঠামোর অধীনে সকল হিসাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর আলাদা ব্যাঙ্ক একাউন্টে পরিচালিত হবে।’

আরও বলা হয় , ‘প্রস্তাবিত ব্যবস্থাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ পর্ষদে (একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট) জরুরী ভিত্তিতে অনুমোদিত হতে হবে; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, ভর্তি সংক্রান্ত দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর ও হিসাব বিভাগ প্রস্তাবিত কাঠামোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনায় প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে ।’

সুপারিশে ইউজিসি বলেছে, ‘সাত কলেজের ভর্তি, পরীক্ষা ও অন্যান্য কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদানের জন্য স্ব স্ব কলেজের অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রণে একটি করে হেল্প ডেস্ক থাকবে; নিয়োগপ্রাপ্তির পরেই প্রস্তাবিত সাময়িক কাঠামোর পরিচালক জনবলের প্রস্তাবসহ কাঠামোর কার্যক্রমের অপারেশন ম্যানুয়েল প্রণয়ন করে সিন্ডিকেটে অনুমোদনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাখিল করবেন। কমিশন সমন্বিত কাঠামোর সার্বিক তত্ত্বাবধানসহ সময়ে সময়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে।’ 


সর্বশেষ সংবাদ