ঢাবির আবাসিক হলে হাউস টিউটরদের নজরদারিতে বিশেষ অ্যাপ চালুর উদ্যোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোতে আবাসিক শিক্ষার্থীদের দেখভালের জন্য একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দেন প্রশাসন। তারা হাউজ টিউটর কিংবা আবাসিক শিক্ষক নামে পরিচিত। এদের বিরুদ্ধে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার অভিযোগ অনেক আগের। এবার তাদের কর্মকাণ্ড নজরদারিতে বিশেষ অ্যাপ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অ্যাপসটি শিগগির চালু হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল অনুসরণ করে। এ জন্য একে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডও বলা হতো। সেই মডেল অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ সার্বিক বিষয়ের দেখভাল করার জন্য নিয়োগ দেয়া হয় আবাসিক শিক্ষক। যারা হলের বিভিন্ন ফ্লোর/ব্লক বা বিল্ডিংয়ের দায়িত্বে থাকেন। নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক, আর্থিক, শারীরিক-মানসিক বিকাশ, আবাসন সমস্যাসহ যাবতীয় বিষয় দেখাশোনা করেন।

একসময় শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক কাজ করলেও বর্তমানে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা। পদটি যেন নামমাত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরে হলকেন্দ্রিক দুই-তিনটি কর্মসূচি ছাড়া নিয়মিত হলে না আসা, ফ্লোর/ব্লক ভিজিট না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, আবাসিক শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই চেনে না নিজ ফ্লোর/ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবাসিক শিক্ষককে। 

জানা যায়, নতুন সিদ্ধান্ত মতে দায়িত্বরত আবাসিক শিক্ষকদের সপ্তাহে দুদিন ও এক মাসে আট দিন হলের কক্ষ পরিদর্শন করতে হবে। পরিদর্শনকালে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো জানবেন এবং প্রতিটি কক্ষের ভিডিও অথবা ছবিসহ অ্যাপসে ইনপুট করবেন। এতে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত হবে। তথ্য ইনপুট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সংশ্লিষ্ট হল প্রাধ্যক্ষ জানতে পারবেন। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড। এর মূল কারণ হলো অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো যেভাবে পরিচালিত হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোও একই পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। অক্সফোর্ডে আবাসিক শিক্ষকরা হলগুলোতে তদারকি ও শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো জেনে যথাযথ ব্যবস্থা নেন। আমাদের হলগুলোতে এই ধরনের তদারকির ব্যবস্থা আছে। তবে এটিকে যেন আরও শক্তিশালী করা যায়, সেজন্য আমরা একটি অ্যাপস তৈরি করার পরিকল্পনা করছি।

তিনি আরও বলেন, দুই মাসের মধ্যেই এটি চালু হবে। আবাসিক শিক্ষকদের সপ্তাহে দুদিন হলে যেতে হবে। দায়িত্বশীল শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের রুমে গিয়ে অসুবিধাগুলো জানবে এবং সেগুলোর ছবি ও ভিডিওসহ অ্যাপসে ইনপুট দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে এটি প্রভোস্ট ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দেখতে পারবেন এবং উপাচার্য হিসেবে আমিও জানতে পারব। এর মাধ্যমে হলে শিক্ষার্থীদের অসুবিধাগুলো বহুলাংশে কমে যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ