জাবি রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে প্রবাসীর বাড়ি দখলে রেখে চাঁদা দাবির অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা  © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার তারিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার আপন ভাইয়ের জামাই জার্মান প্রবাসীর বাড়ি দখলে রেখে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবার। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০০৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আশুলিয়া এলাকায় পাঁচ শতাংশ জমি ক্রয় করেছিলাম। পরে সেখানে বাড়ি নির্মাণ করা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তখন আমার আপন ছোট চাচা শশুর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার তারিকুল ইসলাম যৌথভাবে ছয়তলা ভবন নির্মাণের প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে পারিবারিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে চুক্তি করি। চুক্তি অনুযায়ী, আমার ভাগের অর্ধেক টাকা পরিশোধ করে জার্মানীতে চলে যাই। পরে আমার শ্যালক মামুনকে কাজ তদারকি করার দায়িত্ব দিয়ে গেছিলাম। তবে কিছুদিন পরে মামুন সড়ক দূূর্ঘটনায় মারা যান।

তিনি আরও বলেন, জার্মানি থেকে ফিরে দেখি, তারিকুল আমার ভাগের কাজ ফেলে রেখে নিজের ভাগের কাজ শেষ করেছেন। তখন তার কাছে চুক্তি অনুযায়ী প্রাপ্য সম্পত্তি বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানাই। তবে আমার প্রাপ্য সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান তারিকুল। অন্যদিকে আমার ও আমার পরিবারের কাছে দেড় কোটি টাকা দাবি করেন তিনি। এছাড়া আমাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও করেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার তারিকুল।

রফিকুল ইসলাম বলেন, তারিকুল আমার জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। আবার আমরা বাড়িতে ঢুকতে চাইলেও তিনি বাঁধা দিচ্ছেন। এছাড়া এতদিনে আমার প্রায় ৩১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ক্ষতি করেছেন। তাই আমরা আমাদের প্রাপ্য সম্পত্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।

রফিকুল ইসলামের স্ত্রী আসমাউল হুসনা বলেন, নিজের আপন চাচা সম্পত্তির জন্য এমন জঘন্য কাজ করতে পারে তা আমরা কখনো ভাবিনি। তিনি তার সত্তোরর্ধ আপন বড় ভাইদের নামে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে স্ত্রীকে দিয়ে মামলা করিয়ে নিয়েছেন। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার হিসেবে একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তির এমন মনোবৃত্তি আমাকে আমার শ্বশুরবাড়িতে হেয় করেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে নিজেদের ন্যায্য হিসাব বুঝে পেতে সংশ্লিষ্ঠদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

এ সময় অভিযোগ করে রফিকুল ইসলামের শ্বশুর ও তারিকুল ইসলামের বড়ভাই ওয়ালিউল্লাহ বলেন, ‘আমি তারিকুলের কাছ থেকে ফ্ল্যাট ক্রয় করার জন্য পাঁচ কিস্তিতে ২৩ লাখ টাকা দিয়েছি। তবে এখন তারিকুল ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।’ 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে নগদ ২৫ লাখ টাকায় জমি কিনে নিয়েছি। এছাড়া বাড়ি নির্মাণের জন্য অধিকাংশ খরচ আমি বহন করেছি। তারা আমার খরচের অর্ধেক পরিশোধ করলে তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিবো।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বাড়ির কাজ চলাকালে রফিকুলকে টাকা দেওয়া বিষয়ে বললে, সে তার শ্বশুরের মাধ্যমে আমাকে ২৩ লাখ টাকা দেয়। তবে তারা এখন সেই টাকার বিনিময়ে ফ্ল্যাট দাবি করছেন।’ 


সর্বশেষ সংবাদ