জাবিতে অছাত্রদের হল ছাড়ার নির্দেশনা নোটিশেই সীমাবদ্ধ

  © ফাইল ছবি

আন্দোলনের মুখে গত ৮ মার্চ সাত দিনের মধ্যে অছাত্রদের আবাসিক হল ছাড়ার নোটিশ দিয়েছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন। এসময়ের মধ্যে হল না ছাড়লে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও উল্লেখ ছিল নোটিশে। তবে এই নির্দেশনা নোটিশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। প্রশাসনের এই নির্দেশনার কোন তোয়াক্কা না করেই এখনও আবাসিক হলের সিট দখল করে আছেন অছাত্ররা। অন্যদিকে গণরুমে দূর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীরা। নোটিশ দিয়েও তা কার্যকর করতে না পারাকে দায়সারা কার্যক্রম বলে অভিহিত করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের শিক্ষা শাখা সূত্র জানায়, ৪৫ ব্যাচ পর্যন্ত প্রায় সব বিভাগের স্নাতকোত্তর সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় আবাসিক হলগুলোতে এখনও ৪৩, ৪৪ ও ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছে। তাদের অনেকেই আছেন রাজনৈতিক ছত্র-ছায়ায়। তবে চলমান আর্থিক সংকটের কারণে কারণেও কেউ কেউ হলে অবস্থান করছেন বলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, স্নাতকোত্তরের রেজাল্ট দিয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। তবে আর্থিক অবস্থা খুব বেশি ভালো না হওয়ায় হলে থেকেই চাকরির প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। কারণ বেকার অবস্থায় আলাদা করে বাসা ভাড়া নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে নবীন শিক্ষার্থীদের বিবেচনায় যত দ্রুত সম্ভব সিট ছেড়ে দেব। 

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায় বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন চরম ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। অছাত্রদের হল ছাড়ার নোটিশ দিলেও সেটা লোক দেখানো নোটিশ ছিল। মূলত হলের সিট নিয়ন্ত্রণ প্রশাসন নয় সম্পূর্ণভাবে ছাত্রলীগের হাতে। ছাত্রলীগ নিজেদের দলের ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের হলে রেখে কিছু নন পলিটিক্যাল শিক্ষার্থীদের হল থেকে নামাচ্ছে। এতে প্রশাসনের ক্ষমতাসীন দলের লেজুরবৃত্তি দৃশ্যমান হয়েছে।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেল। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ কখনো এসব কাজকে প্রশ্রয় দেয় না, ভবিষ্যতেও দেবে না। অছাত্রদের হলে না থাকার ব্যাপারে আমাদের কঠোর নির্দেশনা আছে। তারপরও কেউ থাকলে খতিয়ে দেখা হবে। তবে অনেকসময় স্বাভাবিক বিভিন্ন কারণে কাউকে কাউকে শিক্ষাজীবন বিলম্বিত করতে হয় আবার অনেক বিভাগে সেশনজটের কারণেও বিলম্বিত হয়। এজন্য প্রশাসনের উচিত সেশনজট নিরসনে মনোযোগী হওয়া।

এ বিষয়ে প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ ভোজের কুপন দেওয়ার সময় ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে অনুরোধ করেছি যেন এ মাসের পরে আর হলে অবস্থান না করে। তারা এ বিষয়ে প্রত্যেকেই আমাকে আশ্বস্ত করেছে। ইতিমধ্যে অনেকে চলেও গেছে। আশা করি খুব দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, আজকে প্রশাসনের সাথে প্রভোস্ট কমিটির একটি মিটিং ছিল। যেখানে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রভোস্টদের বলে দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের উপর বিজ্ঞপ্তিটি যেন কার্যকর করা হয়। প্রয়োজনে আবারো কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হবে। এছাড়া প্রভোস্ট কমিটিকে এই বন্ধের মধ্যে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রত্ব শেষ হয়েও যারা এখনো হলে অবস্থান করছে তাদের দ্রুত হল ছেড়ে দেওয়ার জন্য গণমাধ্যমের মাধ্যমেও বিষয়টি তুলে ধরার অনুরোধ করেন তিনি। 

এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ ও উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও পাওয়া যায়নি। 

এর আগে গত ৫ মার্চ গণরুম নির্মূলে ৩ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে। পরবর্তীতে উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence