‘রক্তভেজা মদ খেয়ে উল্লাস করে ইতররা’

অ্যাম্বুলেন্স দূর্ঘটনায় আহতদের ক্ষতিপূরণের দাবিসহ ৩ দফা দাবি ছাত্র ফ্রন্টের
অ্যাম্বুলেন্স দূর্ঘটনায় আহতদের ক্ষতিপূরণের দাবিসহ ৩ দফা দাবি ছাত্র ফ্রন্টের  © টিডিসি ফটো

বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউনিয়নের মদ আনতে গিয়ে দুটি প্রাণকে নির্মমভাবে হত্যা করে সেই রক্তভেজা মদ খেয়ে উল্লাস করেছে ইতররা বলে মন্তব্য করেছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায়। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে অ্যাম্বুলেন্স দূর্ঘটনায় আহতদের ক্ষতিপূরণের দাবিসহ ৩ দফা দাবিতে এক বিক্ষোভ মিছিলের সময় এ কথা বলেন তিনি।  

কনোজ কান্তি বলেন, অ্যাম্বুলেন্সে মানুষের জীবনকে বাঁচানোর বদলে হত্যা করা হয়েছে। এরকম নির্মম হত্যাকান্ডের পর সেই রক্তভেজা মদ খেয়ে যারা উল্লাস করেছে তাদের ইতর ছাড়া কিছু বলা যায় না। যারা এরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত তাদের কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের শাস্তি ও ভুক্তভোগীদের ব্যয়ভার বহনের দাবি জানাচ্ছি। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা কর্মীরা পুলিশকে অসহযোগিতা করেছে। তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। 

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের দাবিগুলো হল, মাদকবাহী অ্যাম্বুলেন্স দূর্ঘটনায় নিহত রিক্সাচালক ও আহত যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, দোষীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যাবস্থা করতে হবে ও বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের অবব্যস্থাপনা দূর করে সুষ্ঠু ধারাবাহিকতা আনতে হবে। 

আরও পড়ুন: মাদকবাহী অ্যাম্বুলেন্সের ‘দ্বিতীয় চাপায়’ মৃত্যু হয় রিকশাচালক কুদ্দুসের

বিক্ষোভ মিছিলের বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, ওই অ্যাম্বুলেন্স এ দুইজন শাখা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন, যাদের ওপর দায়িত্ব ছিল হলের পুনর্মিলনীর জন্য ঢাকা থেকে মদ নিয়ে আসা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ব্যাচের র‍্যাগ উৎসবের জন্য ঢাকা থেকে মদ নিয়ে আসার জন্য আবারও এম্বুলেন্স এর ব্যবহার করা হয়েছে। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি উৎসবে মদ পরিবহনের নিরাপদ বাহনে পরিণত হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স। এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হোক। অন্যথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নিকৃষ্ট কালিমা লেগে থাকবে।

এসময় জাবি সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচি বলেন, একজন মায়ের গর্ভের সন্তান মারা যাওয়া মানে ওই পরিবারের স্বপ্ন মারা যাওয়া। এই ঘটনা অনেক বড় অমানবিকতার পরিচয়। তারা পশুর থেকেও নির্মম হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে মানবতার জায়গা নেই। যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের জীবন বাঁচাতে অ্যাম্বুলেন্স পায় না সেখানে তারা ভোগ বিলাসের জন্য মদ কিনতে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করছে।  

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জানুয়ারি সাভারের বিপিএটিসি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্স একটি রিক্সাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে রিক্সাচালক ঘটনাস্থলেই মারা যায়। সেসময় রিক্সায় চারজন যাত্রী ছিল। তাদের পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে মাদক আনার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল।


সর্বশেষ সংবাদ