চবির চারুকলা বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশ
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:৩৩ PM , আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:৩৩ PM
সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটে একমাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত দশটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে চারুকলা ইনস্টিটিউট বন্ধ থাকলেও ক্লাস চলবে অনলাইনে। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারী) জরুরি এক সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘চারুকলায় বিদ্যমান অচলাবস্থা নিরসনে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নিতে সিন্ডিকেটের জরুরি সভা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক মাস চারুকলা ইনস্টিটিউট বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীদের এজন্য রাত ১০টার মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়তে হবে। এই এক মাস শিক্ষার্থীদের পাঠদান অনলাইনে চলবে। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে চারুকলার সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে। সংস্কার কাজ তদারকি করার জন্য শিগগিরই একটা কমিটি গঠন করা হবে।'
প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে অনশনে যাওয়ার হুশিয়ারী দিয়েছেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। এবিষয়ে ইনস্টিটিউটটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ ফাহিম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি সেটি আরো কঠোর হবে। আমরা অনশন করবো। সিন্ডিকেটের এমন সিদ্ধান্তে আমাদের দাবি কখনোই পূরণ হবে না।
এর আগেরদিন বুধবার (১ ফেব্রুয়ারী) রাত সাড়ে ১২টায় চারুকলার শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি আন্দোলনের আশংকায় পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালায় চবি প্রক্টরিয়াল বডি। এসময় ছাত্র হোস্টেলের ১০৪ নম্বর কক্ষ থেকে গাঁজা এবং ১০৫ নম্বর কক্ষ থেকে এক ছাত্রীকে আটক করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, মূল ক্যাম্পাসে ফেরাসহ কয়েকটি দাবিতে ৯৩ দিন আন্দোলনের পর ২৩ জানুয়ারি গাছতলায় ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। তখন চার দফা দাবি জানিয়ে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেন তারা। দাবি আদায় না হওয়ায় মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) থেকে ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশংকায় বুধবার (১ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় চারুকলার শিক্ষার্থীদের পুলিশের সহায়তায় চারুকলায় অভিযান চালায় প্রক্টরিয়াল বডি।
চারুকলার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূল ক্যাম্পাস ছাড়া তাঁদের এই ২২ দফা দাবির সবগুলো পূরণ হবে না। তাঁদের দাবির উদ্দেশ্যে হচ্ছে মূল ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তন। তবে বিগত ১১ বছর ধরে দৃশ্যমান কোনো সংস্কার কিংবা অগ্রগতি তাঁরা দেখেননি। সেখানে নানান প্রতিকূলতা এবং সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
সর্বশেষ আন্দোলনের বিষয়ে ২১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী। পরদিন দ্বিতীয় দফায় জেলা প্রশাসক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেওয়ার পরে এক সপ্তাহের জন্য আন্দোলন স্থগিত করে এবং শ্রেণীকক্ষের বাহিরে গাছতলায় ক্লাস করার সিদ্ধান্ত নেন।
২০১০ সালে চবি চারুকলা বিভাগ ও চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজকে একীভূত করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।