বাংলাদেশে স্টারলিংক: দামের চাপে টিকবে তো স্যাটেলাইট ইন্টারনেট?
- টিডিসি রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৬ PM , আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৬ PM

বাংলাদেশে শিগগিরই স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করতে যাচ্ছে মার্কিন টেলিকম জায়ান্ট স্টারলিংক। ইতোমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন স্থাপন ও কারিগরি সহায়তায় যুক্ত হয়েছে স্টারলিংকের সঙ্গে। রাজধানী ঢাকায় একাধিকবার এর সংযোগ ও গতি পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে।
তবে প্রশ্ন উঠছে— প্রচলিত ব্রডব্যান্ড সেবার তুলনায় বেশি মূল্যের এই ইন্টারনেট সেবা বাংলাদেশের বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে কি না?
স্টারলিংকের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সংযোগ পেতে হলে ব্যবহারকারীকে একটি কিট কিনতে হবে যার দাম প্রায় ৩৪৯ থেকে ৫৯৯ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো। এছাড়া প্রতি মাসে সম্ভাব্য সাবস্ক্রিপশন ফি হতে পারে ১২ থেকে ১৭ হাজার টাকা।
বর্তমানে দেশে ৫০০ থেকে ১২০০ টাকায় ৫-২০ এমবিপিএস গতি সম্পন্ন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যায়, যা প্রায় ১০ গুণ সস্তা স্টারলিংকের তুলনায়। তাছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি (বিএসসিএল) ১০ শতাংশ ব্যান্ডউইথ মূল্য কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা স্টারলিংকের জন্য প্রতিযোগিতায় বাড়তি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্টারলিংকের গতি ২৫ থেকে ২২০ এমবিপিএস, যা বাংলাদেশের গড় ব্রডব্যান্ড গতির (প্রায় ৫১ এমবিপিএস) চেয়ে অনেক বেশি। ঢাকায় পরীক্ষামূলক সংযোগে ডাউনলোড গতি পাওয়া গেছে ২৩০ এমবিপিএস পর্যন্ত। ফলে, গতি ও মানের দিক থেকে স্টারলিংক নির্ভরযোগ্য একটি অপশন— বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে স্থলভিত্তিক সংযোগ দুর্বল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্টারলিংকের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় গ্রামীণ সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটি ব্যবহারযোগ্য নয়। তবে আইটি কোম্পানি, কর্পোরেট হাউজ এবং সরকারি জরুরি সেবায় এটি অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. রিফাত শাহরিয়ার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘স্টারলিংক অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে, তবে এটি বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হওয়াই ভালো হবে। একে একমাত্র উৎস হিসেবে ভাবা ঠিক নয়।’
অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা আকবর জানান, “দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ হয়ত এর সুবিধা নিতে পারবে না। তবে যারা উন্নতমানের ইন্টারনেট চায়, তাদের জন্য এটি ভালো বিকল্প হবে।”
বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, আফ্রিকার কিছু দেশে ১০ থেকে ৩০ ডলারে স্টারলিংক ইন্টারনেট সরবরাহ করছে। বাংলাদেশের মতো উদীয়মান বাজারেও শুরুতে এমন মূল্যে সেবা চালু করলে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়তে পারে এবং প্রতিযোগিতায় স্টারলিংক টিকেও থাকতে পারবে।