কটূক্তি থামাতে পারেনি তিথিকে—নিজের সৃজনশীলতায় প্রতি মাসে আয় করেন ২০-২৫ হাজার টাকা
- চাঁদপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১২ PM , আপডেট: ৩০ নভেম্বর -০০০১, ১২:০০ AM

তাজিয়া রাব্বি তিথি। ডিগ্রি ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি নিজের হাতে তৈরি করেন নকশিকাঁথা, পাঞ্জাবী আর চুড়িতে রং তুলিতে ফুটিয়ে তোলেন সৃজনশীলতার ছাপ, আর মানুষের হাতে মেহেদি দিয়ে আঁকেন রঙিন স্বপ্ন।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার একতা বাজার এলাকার এই তরুণী এখন অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন অনেকের কাছে। তার স্বপ্ন নারীদের পরনির্ভরশীলতা কাটিয়ে তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তোলা। তিনি হতে চান নারী উদ্যোক্তাদের সফলতার কারিগর।
চার বছর আগে শখের বশে শুরু। এখন তিনি প্রতিমাসে আয় করেন ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। ঈদের সময়টাতে তার কর্মব্যস্ততা
আরও বেড়ে যায়। মেহেদি ডিজাইন, হেয়ার ও স্কিন কেয়ার, হ্যান্ডক্রাফট, আর্ট ও ফ্যাশন ডিজাইনে নিজের প্রতিভার ছাপ রেখে আজ তিনি চাঁদপুরের মানুষের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম।
তিথির তৈরি মেহেদি ডিজাইন চাঁদপুরে বেশ পরিচিত। জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির ‘নতুন কুঁড়ি’ বিভাগে মেহেদি ডিজাইনের জন্য তিনি দু’বার পুরস্কারও পেয়েছেন। তার কাজ শুধু সাজসজ্জায় নয়, শিল্প ও নান্দনিকতার দিক থেকেও সমৃদ্ধ।
তিনি বলেন, মেয়েরা চাইলেই নিজেদের জন্য কিছু করতে পারে। অল্প পুঁজি দিয়ে নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে তারা স্বাবলম্বী হতে পারেন।
তিথির ভাষ্য, একজন উদ্যোক্তা নিজে সফল হলে চলবে না। তাকে আরও দশজনকে পথ দেখাতে হবে। আমি চাই আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে অন্য মেয়েদের হাত ধরতে। নারীর স্বাবলম্বিতা সমাজকে বদলে দিতে পারে। আমি শুধু চাই, মেয়েরা ঘরে বসে না থেকে নিজের পরিচয় গড়ে তুলুক।’
তিনি আরও বলেন, উদ্যোক্তা হতে গিয়ে পরিবার থেকে বাঁধা পাইনি কখনো, তবে প্রতিবেশীদের অনেক কটূক্তি শুনেছি। রাতে বাড়ি ফিরতে দেরি হতো বলে তারা আমার চরিত্র নিয়েও কথা বলত। মনে মনে ভেবেছি সফলতার মাধ্যমে তাদের জবাব দেব। তবে আমার পরিবার আমার পাশে ছিল। এখন আমি প্রতিমাসে ২০-২৫ হাজার টাকা উপার্জন করি। ঈদের সময় ইনকাম আরও বেশি সময়।
নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিথি বলেন, আমার স্বপ্ন নিজের কাজের পরিধিকে আরও বড় করা, যাতে আমি অন্য মেয়েদের কাজের ব্যবস্থা করতে পারি। আমাকে দেখেই যেন তাদের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন শুরু হয়।