কলেজ জীবন থেকেই বিসিএসের স্বপ্ন, মাস্টার্স শেষ হওয়ার আগেই শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ

রিফাত আহমেদ
রিফাত আহমেদ  © সংগৃহীত

শৈশবের দুরন্তপনা থেকে বিসিএস ক্যাডারে নাম লেখানো—রিফাত আহমেদের জীবন যেন এক অনুপ্রেরণার গল্প। শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের মলামারী পূর্ব গ্রামের এই তরুণ প্রথমবার বিসিএস দিয়েই শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পেয়েছেন। মাস্টার্স শেষ হওয়ার আগেই তিনি ৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি কলেজের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি সহকারী অধ্যাপক (রসায়ন) হিসেবে কর্মরত আছেন।

রিফাতের বেড়ে ওঠা গ্রামে। বাবা মো. রহুল আমিন বাবুল একজন শিক্ষক, মা জোসনা বেগম সংসার সামলাতেন। স্বল্প আয়ে সংসার চললেও বাবা-মা কখনো পড়াশোনায় কমতি রাখেননি। শৈশব কেটেছে গ্রামের খেলাধুলা আর মায়ের কাছে গল্প শুনে। সন্ধ্যা হলে হারিকেনের আলোয় পড়তে বসা, বাবার মুখে ‘Reading for pleasure’ শুনে শেখা—এসবই ছিল তাঁর দিনলিপি।

কাকিলাকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু। এরপর কাকিলাকুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এসএসসিতে পান জিপিএ-৫, যা তখনকার শ্রীবরদী থানার জন্য বিরল অর্জন। এরপর ঢাকা তেজগাঁও বিএএফ শাহীন কলেজে ভর্তি হলেও পরে ফিরে আসেন গ্রামে। ভর্তি হন বকশীগঞ্জ সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করেন।

বুয়েটে ভর্তির স্বপ্ন ছিল, ঢাকার ফার্মগেটে ভর্তি হয়েছিলেন কোচিংয়েও। তবে ভাগ্য তাঁকে নিয়ে যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে রসায়ন বিভাগে পড়ার সুযোগ পান। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কখনো কোনো ক্লাস মিস করেননি। এমনকি কলেজেও নিয়মিত ক্লাস করতেন। একবার মামার বিয়ের জন্য বাইক নিয়ে নিতে আসলেও তিনি বুঝিয়ে ফেরত পাঠান। কারণ, একদিনের পাঁচটি ক্লাস মিস দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ও ভালো ফল ধরে রাখেন। অনার্সে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেন। মাস্টার্সে ভর্তি হন ভৌত রসায়নে, যেখানে তাঁর অবস্থান ছিল শীর্ষে। গবেষণা কাজের জন্য পেয়েছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তাঁর গবেষণা আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, যা গুগলে 'Rifat Ahmed Research' লিখে সার্চ দিলেই পাওয়া যাবে।

বিসিএস ক্যাডারে আসার স্বপ্ন ছিল কলেজ জীবন থেকেই। বিসিএস ক্যাডারদের জীবনযাপন দেখে তিনিও তাঁদের মতো হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। সকাল থেকে বিকেল ক্লাস, সন্ধ্যায় টিউশনি, রাতভর বিসিএসের বই—এভাবেই কেটেছে তাঁর প্রস্তুতির সময়।

৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন তিনি। সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিতে চান। শিক্ষার্থীদের মোবাইলের ইতিবাচক ব্যবহার, শৃঙ্খলা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।

তিনি একটি ফেসবুক গ্রুপ 'Bcs Preparation' পরিচালনা করেন, এই গ্রুপে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পড়াশোনার জন্য উৎসাহিত করেন। তিনি চান ভবিষ্যতে আরও শিক্ষার্থীদের সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence