আপত্তিকর ছবি তোলাসহ দশ অভিযোগ ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী  © সংগৃহীত

ইডেন কলেজের ছাত্রী নিবাসে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠছে ছাত্রলীগের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নুজহাত ফারিয়া রোকসানা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। নির্যাতনের মুখে এক ছাত্রী জ্ঞান হারান। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল ভর্তি করা হয়। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীকে ছাত্রী নিবাস থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

ছাত্রলীগ নেত্রী রোকসানা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী। ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ নেই। নতুন কমিটিতে রোকসানা শীর্ষ পদপ্রত্যাশী।

ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী নিবাসের ৫০৭ নম্বর কক্ষে বৈধ ছাত্রীরা থাকেন। কক্ষটি দখলে নিতে বেশ কিছুদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছেন ছাত্রলীগ নেত্রী রোকসানা। ১০ এপ্রিল রোকসানা তার অনুসারীদের নিয়ে কক্ষটি দখলে নিতে যান। এই সময় তাদের বাধা দেন আগে থেকে কক্ষে অবস্থান করা ছাত্রীরা। এক পর্যায়ে ফারিয়া হক অর্পিতা নামে এক ছাত্রীকে মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে ফারিয়া জ্ঞান হারান। জ্ঞান ফেরার পর অর্পিতা বমি করতে থাকলে ছাত্রী নিবাসের দায়িত্বে থাকা আবাসিক শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়।

ঘটনার পরপরই ছাত্রী নিবাসের তত্ত্বাবধায়ক নাজমুন নাহারের নেতৃত্বে বাকী শিক্ষকরা সেখানে যান। তখন তাদের সঙ্গে রোকসানা ও তার অনুসারীরা দুর্ব্যবহার করেন। পরে সেখান থেকে চলে যান শিক্ষকরা। পরেরদিন ছাত্রী নিবাসের বৈধ ছাত্রীরা একজোট হয়ে ছাত্রলীগ নেত্রী রোকসানাকে কলেজ ও ছাত্রী নিবাস থেকে বহিষ্কার করার দাবি জানিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর আবেদন করেন।

আরও পড়ুন- বাবা-মায়ের টাকায় চলা শিক্ষার্থীরা ‌‘পেরে উঠছে না’

আবেদনপত্রে রোকসানার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ করেন ছাত্রীরা। অভিযোগগুলো হল- অবৈধ ভাবে রুম দখল, ছাত্রীদের শারীরিক এবং মানসিক ভাবে নির্যাতন করা, ধর্ষণের হুমকি, অবৈধভাবে বহিরাগত মেয়ে দিয়ে সিট দখল, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, জিনিসপত্র ভাংচুর, টাকা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র চুরি, মেয়েদের জোরপূর্বক রাজনীতিতে জড়ানো, মেয়েদের জোরপূর্বক আপত্তিকর ছবি তোলা, বৈধ ছাত্রীদের অধিকার হরণ করা।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, শুধু অর্পিতা নয়, রোকসানার হামলায় ৫০৭ নম্বর কক্ষের সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ছাত্রীরা দাবি করেন, শুধু ছাত্রী নিবাসে নয় কলেজেও রোকসানার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অনেক ছাত্রী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হলের এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এর আগেও আমরা কয়েকবার রোকসানার বিরুদ্ধে ছাত্রী নিবাসের তত্ত্বাবধায়কের কাছে অভিযোগ করেছি। একই সঙ্গে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশিকেও ঘটনাগুলো জানিয়েছিলাম। কিন্তু কেউই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি।

আরও পড়ুন- ‘ঢাবি-বুয়েট-ইডেন ছাত্রীরা পতিতাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত’— গাইড বইয়ের তথ্যে বিভ্রান্তি-সমালোচনা

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নুজাত ফারিয়া রোকসানা বলেন, এসব সাজানো ঘটনা। আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।

এসব বিষয়ে ছাত্রী নিবাসের তত্ত্বাবধায়ক নাজমুন নাহার বলেন, ছাত্রীদের অভিযোগপত্র পেয়েছি। তারা আমার মাধ্যমে অধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছে। রোকসানাকে আমরা ছাত্রী নিবাসে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।


সর্বশেষ সংবাদ