নেতাকর্মীদের মাথা কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়া লিটনের বিচার চায় শিবির

এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন
এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন  © ফাইল ছবি

জামায়াত-শিবির আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আগেই তাদের নির্মূল করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

গত সোমবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মিলিত হল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছেন, একটি সুযোগের অপেক্ষায় আছে জামায়াত-শিবির। সুযোগ পেলেই তারা সাপের মতো ফোঁস করে উঠবে। ফোঁস দেয়ার আগেই তাদের গলাটা কেটে পার করে দিতে হবে।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে সিটি মেয়র আরও বলেন, আজকে জামায়াত-শিবির প্রকাশ্যে নেই, কিন্তু তারা আছে। হলেই আছে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে তো আছে। পালিয়েও যায়নি, হারিয়েও যায়নি। তারা আপাতত মিছিল করছে না, স্লোগান দিচ্ছে না। শুধু ক্লাস করছে আর বাড়ি চলে যাচ্ছে।

“একটি সুযোগ যদি তারা আবার পায়, সাপের মতো ফোঁস তুলে উঠবে। এই ফোঁস তোলার সুযোগ যেন তারা না পায়। ফোঁস দেয়ার আগেই গলাটা কেটে পার করে দিতে হবে। এটি পরিষ্কার নির্দেশ আমাদের।”

এদিকে, রাসিক মেয়র লিটনের এম বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি রাগীব শাহরিয়ার ও সেক্রেটারি তাসনীম আলম বলেন, আমরা অবিলম্বে এ দায়িত্বহীন বক্তব্য প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি। প্রকাশ্যে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের মাথা কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়ার অপরাধে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি জানানো হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে উদ্দেশ্য করে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের উস্কানি ও আক্রমণাত্মক সন্ত্রাসী বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

“জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের মাথা কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়ে খায়রুজ্জামান লিটন আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তার এই বক্তব্য ফৌজদারি অপরাধের শামিল। তার আজন্ম সন্ত্রাসী চরিত্র ও বিকৃত রূপ জাতির সামনে প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রকাশ্যে বর্বর, সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের মাথা কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন।”

সংবাদ বিজ্ঞপ্তির দাবি, তার (মেয়র) সাথে সুর মিলিয়ে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেছেন, যেখানেই জামায়াত-শিবির সেখানেই গণধোলাই। আর সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেছেন, জামায়াত-শিবিরকে রুখে দিতে সকল ধরনের সহযোগিতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ করবে। তাদের এসব বক্তব্য কোন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা ছাত্রসংগঠনের নেতার হতে পারে না বরং তা সন্ত্রাসী বর্বরদের বক্তব্য। আদর্শহীন সন্ত্রাসনির্ভর আওয়ামী রাজনীতির ভয়াল চিত্রটি তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে দেশবাসী আবারো দেখতে পেয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “খায়রুজ্জামান লিটন প্রকাশ্যে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের মাথা কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়ার অপরাধে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। আমরা অবিলম্বে তাদের এ দায়িত্বহীন বক্তব্য প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি। আমরা আশা করি, ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচারবোধ থাকলে তারা তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করবেন।”


সর্বশেষ সংবাদ