শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়াসহ ৫ দাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের

লোগো
লোগো  © ফাইল ছবি

দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, ক্যাম্পাসগুলো থেকে পুলিশ-বিজিবি-র‌্যাব প্রত্যাহার করাসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক অনিক কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন যৌথ বিবৃতিতে বলেন, সারাদেশে অব্যাহতভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার-দমন-নির্যাতনের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দলীয় পেটোয়া বাহিনী ছাত্রলীগ দিয়ে হামলা করার মধ্য দিয়ে আন্দোলন যে সহিংস রূপ ধারণ করেছে তার সম্পূর্ণ দায়ভার সরকারের।

‘‘সারাদেশে পুলিশ ও ছাত্রলীগের গুলি ও হামলায় কয়েকশত ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের উপর নির্মম হামলা ও ছাত্রী লাঞ্চনার প্রেক্ষিতে দেশের সর্বত্র বিক্ষুব্ধ ছাত্র-শ্রমিক-অভিভাবকসহ সাধারণ জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে আন্দোলনে নেমে আসে। ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত দাবি না মেনে এই বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে ষড়যন্ত্রকারী, সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্ত তকমা দিয়ে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপকৌশলে লিপ্ত হয়েছে সরকার।’’

তারা বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের পূর্বেই বিরোধী দলের উপর দায় চাপানো তদন্তকে নিপীড়নের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার অকৌশল মাত্র। ভোটারবিহীন নির্বাচন, চূড়ান্ত গণতন্ত্রহীনতা, অবাধ দূর্নীতি-লুটপাট, বিরোধী দল-মত দমন, বেকারত্ব,  দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ক্যাম্পাসগুলিতে ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব সর্বস্তরের জনগণ ও ছাত্রসমাজকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে যার ফলাফল আজকের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গণবিক্ষোভকে আপাত প্রশমনের লক্ষ্যেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আন্দোলনের শুরু থেকে শিক্ষার্থীরা দাবি করছে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন, বিভিন্ন অংশীজনের মতামত গ্রহণের মধ্য দিয়ে কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার ও তা সংসদে আইন পাশ করে কার্যকর করা। অপরদিকে কয়েকশত শিক্ষার্থীর লাশের উপর দাঁড়িয়ে সরকার তড়িঘড়ি করে যে প্রজ্ঞাপন জারি করলো তাতে কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার ঘটেনি বরং যে দুর্বলতা আছে তা ভবিষ্যতে আরও জটিলতার জন্ম দিতে পারে।

আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে একদিকে হত্যা নির্যাতন চালানো এবং পরবর্তীতে আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার, হয়রানির তীব্র নিন্দা জানিয়ে নেতৃবৃন্দ ৫ দফা দাবিসমূহ জানিয়েছেন। দাবিগুলো হলো-

ছাত্র-জনতা হত্যার দায় স্বীকার করে অনতিবিলম্বে হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে; গণগ্রেপ্তার, হয়রানি, দমন-পীড়ন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। কারফিউ প্রত্যাহার করে জনজীবন স্বাভাবিক করতে হবে। ইন্টারনেট চালু করতে হবে; অংশীজনের মতামত গ্রহণ সাপেক্ষে কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার ও সংসদে আইন পাশ করে তা কার্যকর করতে হবে।

সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া, ক্যাম্পাস থেকে পুলিশ-বিজিবি-র‌্যাব প্রত্যাহার করে নেয়া এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়ে সন্ত্রাস-দখলদারিত্বমুক্ত গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে। হল খুলে মেধা ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ করতে হবে; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবিসমূহ মেনে নাও, সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত কর।


সর্বশেষ সংবাদ