মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি ঢাবি ছাত্রলীগের কমিটি
- মুহাইমিনুল ইসলাম, ঢাবি
- প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৫৪ PM , আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:১০ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের কমিটির এক বছর পূর্ণ হবে আজ বুধবার (২০ ডিসেম্বর)। তবে কমিটির মেয়াদ শেষ হতে চললেও দায়িত্বপ্রাপ্তরা দুজনের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেননি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। তাদের অনেকের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় পদে আসার সুযোগ হয়নি। শীর্ষ নেতারা বলছেন, নির্বাচনের আগে আর এ কমিটি পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গেল বছরের ২০ ডিসেম্বর মাজহারুল কবির শয়নকে সভাপতি ও তানভীর হাসান সৈকতকে সাধারণ সম্পাদক করে সংগঠনটির কমিটি ঘোষণা করা হয়। এক বছরের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই কমিটির অনুমোদন দেন।
এদিকে, ঢাবি ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ না করারকে শীর্ষ নেতাদের গাফিলতি বলছেন পদপ্রত্যাশীরা। তারা বলেন, শীর্ষ নেতাদের দায়িত্বহীন আচরণে কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও দুজনের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, আসন্ন নির্বাচনের আগে তারা কৌশলগত কারণে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার বিষয়ে ভাবছেন না।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখা সাংগঠনিক জেলার মর্যাদা পায়। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ১০ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘জেলা শাখার কার্যকাল এক বছর’। সেই হিসেবে আজ বুধবার (২০ ডিসেম্বর) শেষ হচ্ছে শয়ন-সৈকতের নেতৃত্বে বর্তমান কমিটির মেয়াদ।
ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৬ মাস আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য নির্দেশনা দিলে তখন মৌখিক নির্দেশনায় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত নেয় ঢাবি ছাত্রলীগ। কিন্তু উদ্যোগের পর আর কোনো গতিশীলতা লক্ষ্য করা যায়নি।
আরও পড়ুন: শয়ন-সৈকতেই বন্দী ঢাবি ছাত্রলীগ, পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে?
কমিটি দেরি হওয়ার পেছনে ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঢাবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনুসারীদের পদায়নের রেওয়াজ রয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নূন্যতম ৩০ জন অনুসারী ঢাবি ছাত্রলীগের কমিটিতে আসবে। এসব বিষয়ে কেন্দ্র এবং ঢাবি সমন্বয় না হওয়ায় এখনো ঝুলে আছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পদপ্রত্যাশী বলেন, সঠিক সময়ে কমিটি দিতে না পারা সভাপতি-সম্পাদকের ব্যর্থতা। তাদের যদি ইচ্ছা থাকতো তাহলে পূর্ণাঙ্গা কমিটি ১ বছরের ভেতরেই দিতে পারতো। তাদের ইচ্ছা ছিল না, তাই দিতে পারেনি। সামনে নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রাসঙ্গিক অপ্রাসঙ্গিক ঝামেলা থাকতেই পারে, নির্বাচনের আগেই কমিটি দেওয়াটা উচিত তাদের ছিল।
বিজয় একাত্তর হলের এক পদপত্যাশী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে। কিন্তু ১ বছর পার হলেও কমিটি নিয়ে শীর্ষ নেতাদের মাথাব্যথা নেই। এটা তাদের ব্যর্থতা। তাদের গাফিলতির কারণে অনেকেই রাজনীতি ছেড়ে দেবে। নির্বাচনের আগে কমিটি না দিলে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যতা হারিয়ে যাবে।
কমিটি কবে হতে পারে জানতে চাইলে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেক ব্যস্ত সময় পার করছি। আমরা এখন কমিটি করছি না। এটা একটা পলিটিক্যাল কৌশল। নির্বাচনে আমাদের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখার পাশাপাশি কৌশলগত কারণে এই মুহূর্তে কমিটি দিচ্ছি না। নির্বাচনের পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।