হামজা চৌধুরীকে কি মানসম্পন্ন সুযোগ-সুবিধা দিতে পারবে বাফুফে?
- টিডিসি স্পোর্টস
- প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৮ PM , আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৮ PM

ইংল্যান্ডে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। সেখানের আলো-বাতাসেই তার জীবন। সেখানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্লাব লেস্টার সিটি। এ ক্লাবের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হামজা চৌধুরী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্লাবটিতে খেলছেন। সেখানে তিনি পাচ্ছেন মানসম্পন্ন ও অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। অন্তত ওই ক্লাবের মতো মানসম্পন্ন সুযোগ-সুবিধা কি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) তাকে দিতে পারবে? জানা গেছে, ওই ক্লাবে ১৭ জনের মতো নাকি ফিজিও আছেন। ইউরোপের উন্নত জীবন, আধুনিক মাঠ, হাই প্রোফাইল কোচ, নিউট্রিশন, থাকার ব্যবস্থা; লেস্টারে গত ২০ বছর ধরে তা পেয়ে আসা হামজাকে বাফুফে কতটা দিতে পারবে, তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা লিগ বলা হয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগকে। এ প্রতিযোগিতার সাবেক চ্যাম্পিয়ন লেস্টার সিটির ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা দেওয়ান চৌধুরী বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার অনুমতি পেয়েছেন। তার অপেক্ষায় পুরো দেশ। ২৫ মার্চ এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা আছে হামজার। এ অবস্থায় তার প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা করছেন অনেকেই।
সম্প্রতি লন্ডন থেকে আড়াই ঘণ্টা জার্নি করে লেস্টার সিটির হোমগ্রাউন্ড কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাওয়া বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে দুই ঘণ্টার সৌজন্য সাক্ষাতে বাংলাদেশের ফুটবল সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে চেয়েছেন হামজা চৌধুরী। খোলামেলা আলোচনায় বাংলাদেশের ফুটবলারদের খাবারের মান, ম্যাচের সময় প্লেয়াররা কোথায় থাকেন, কোথায় অনুশীলন করেন, ফুটবলারদের ইনজুরি প্রতিরোধের ব্যবস্থাসহ আরও অনেক বিষয়ে তাবিথ আউয়ালের কাছে জানতে চান লেস্টার সিটির এ তারকা।
সেখানে থাকা বাফুফের নির্বাহী সদস্য ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ গণমাধ্যমকে তাবিথ ও হামজার আলোচনার এই বিষয়গুলো তুলে ধরেন। বাফুফে সভাপতিও সাধ্যের মধ্যে সবটুকু করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছে তিনি।
জানা গেছে, লন্ডন থেকে লেস্টার সিটির হোম গ্রাউন্ড কিং পাওয়ার স্টেডিয়াম যেতে সড়ক পথে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টার মতো। হামজার আমন্ত্রণে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার ও ক্রিস্টাল প্যালেসের ম্যাচ দেখতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে যান তাবিথ আউয়াল। গ্যালারির প্লেয়ার লাউঞ্জে বসে ভিআইপি ব্যবস্থায় হামজার বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে খেলা দেখেছেন বাফুফে সভাপতি। প্রিমিয়ার লিগে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে অবশ্য মাঠে নামা হয়নি হামজার। তার দল হারে ২-০ গোলে। ম্যাচ শেষে স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় তাবিথ আউয়ালের জন্য নৈশভোজের ব্যবস্থা করেন হামজা নিজেই। সেখানে ছিলেন হামজার বাবা-মা। ছিলেন বাফুফের নির্বাহী সদস্য ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ।
এই সময়ে আলোচনার মূলেই ছিল ফুটবল। কবে নাগাদ জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারবেন লিস্টার সিটির এ ডিফেন্ডার, তা নিয়েও কথা হয়েছে। সেটা অবশ্য হামজা এবং তার ক্লাবের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান।
ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচের আগে ২০ দিনের জন্য সৌদি আরবে ক্যাম্প করবে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল। ম্যাচের আগে দলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে ক্যাম্পে হামজাকে রাখতে চায় ফেডারেশন। সেটা কতটা বাস্তবে রূপান্তর করা যাবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ফিফার নিয়ম অনুযায়ী কোনো দেশের ফুটবলার ম্যাচের ৭২ ঘণ্টা আগে ক্লাব থেকে ছাড়পত্র পান। সেটা হলে হামজার জন্য সৌদি ক্যাম্পে যোগ দেওয়াটা কঠিন। তখন হয়তো সম্ভাব্য ভেন্যু শিলংয়ে গিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে যোগ দেবেন হামজা।
আবার হামজাকে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সারির লিগে খেলা শেফিল্ড ইউনাইটেডে ধারে দেওয়ার চিন্তা করছে লেস্টার। দু’পক্ষ সমঝোতায় এলে হয়তো সৌদির ক্যাম্পে তপু বর্মণ-শেখ মোরসালিনদের সঙ্গী হতে পারবেন তিনি। যেহেতু মার্চের ফিফা উইন্ডো ৮ দিনের মতো; ১৭-২৫ তারিখ পর্যন্ত, সেহেতু এই সময় বিভিন্ন দেশ বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলবে। তাই ক্লাবগুলোও ১৪ মার্চের মধ্যে তাদের ফুটবলারদের ছেড়ে দেবে। এই হিসাব করলে আর হামজার সম্ভাব্য নতুন গন্তব্য শেফিল্ড ইউনাইটেড রাজি হলে সৌদি আরবে জাতীয় দলের ক্যাম্পে হামজার যোগ দেওয়াটা সম্ভব।